তুরস্কের স্বপ্নযাত্রা থামিয়ে বার্লিনে কমলা উৎসব
১৬ বছর পর ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা তুরস্ককে ডাকছিল সেমিফাইনাল। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লম্বা সময় লিড নিয়ে সেই পথেই যেন এগিয়ে যাচ্ছিল ভিনসেঞ্জো মন্টেলার শিষ্যরা। কিন্তু, তুর্কিদের স্বপ্ন সত্যি হতে দিল না নেদারল্যান্ডস। বরং বার্লিনে প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে ইউরোর শেষ চারের টিকিট পেয়ে গেল অরেঞ্জ আর্মিরা।
শনিবার দিবাগত রাত ১টায় শুরু হওয়া ইউরোর শেষ কোয়ার্টার ফাইনালে তুরস্ককে ২-১ গোলে হারিয়েছে নেদারল্যান্ডস। দলের জয়ের ম্যাচ স্টিফেন ভ্রিজ। অন্যটি আসে আত্মঘাতি গোলের সুবাদে। অন্যদিকে তুরস্ককে স্বপ্ন দেখানো একমাত্র গোলটি করেন সামেত আকায়দিন।
বার্লিনের অলিম্পিক স্টেডিয়ামের গ্যালারি জুড়ে কমলা রঙের জার্সিতে ছেয়ে ছিল। মাঠভর্তি দর্শকদের সামনেই কিনা ম্যাচের ৩৫ মিনিটে গোল খেয়ে বসে নেদারল্যান্ডস। কর্নার কিক থেকে আসা বলে মাথা ছুঁইয়েও নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি ডাচরা। বল চলে যায় গুলেরের পায়ে। তিনি ভাসিয়ে দেন আকায়দিনের কাছে। ওই জটলার মধ্যেই বল পেয়ে সুযোগ মিস করেননি আকায়দিন। ভেসে আসা বলে হালকা করে মাথা ছুঁয়ে দিয়ে দলকে লিড এনে দেন আকায়দিন।
এই লিড ধরেই জয়ের পথে ছুটছিল তুরস্ক। কিন্তু শেষ দিকে এসে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। ম্যাচের ৭০ মিনিটে পুরো তুরস্ক শিবিরকে স্তব্দ করে গোল পেয়ে যান স্টিফেন। দেপাইয়ের পাস থেকে জোরালো হেডে বল ঠিকানায় পাঠান স্টিফেন। সমতায় ফেরার পর আরও উজ্জীবিত হয়ে ওঠে ডাচরা।
এর মাঝেই নিজেদের ডি বক্সে তালগোল পাকিয়ে বসে তুরস্ক। ম্যাচের বয়স তখন ৭৬ মিনিট। বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে নিজেদের ডি বক্সেই প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের গায়ে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান মের্তো মুলদূর। গোলরক্ষক গুনোকও রাখতে পারেননি নিজের নিয়ন্ত্রণ। গোলবারের সামনে তিনিও মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মের্তোর পায়ে লেগে বল চলে যায় তুরস্কর জালে। অন্য পাশে হেলে পড়ায় ততক্ষণে কিছুই করার ছিল নাহ গোলকিপারের। তুরস্কের ভুলে গোল পেয়ে যায় নেদারল্যান্ডস। উচ্ছ্বাসে ফেটে পরে পুরো বার্লিন।
এই ব্যবধান ধরে রেখেই শেষটা রাঙায় নেদারল্যান্ডস। দারুণ প্রত্যাবর্তন আর ভাগ্যের ছোঁয়ায় অরেঞ্জ আর্মিরা পেয়ে যায় ইউরোর শেষ চারের টিকিট।
পুরো ম্যাচ জুড়ে দারুণ খেলা উপহার দিয়েও সেমির স্বপ্ন পূরণ করতে পারল না তুরস্ক। ২০০২ সালে বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থানে শেষ করা তুরস্কের দ্বিতীয় বার কোনও বড় প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে ওঠার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল।