বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়াই রংপুরকে হারিয়ে রাজশাহীর চমক
‘পচা শামুকে পা কাটল’—আট ম্যাচ পর দুর্বার রাজশাহীর কাছে হেরে এভাবেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ট্যাটাস দিয়েছিল সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করা রংপুর রাইডার্স। অঘটন নয়, মাঠের পারফরম্যান্সেই বিপিএলের অন্যতম তারকাসমৃদ্ধ দলটিকে যে হারিয়েছিল রাজশাহী, তাই ফের প্রমাণ করল তাসকিনরা। চট্টগ্রামের পর ঢাকা পর্বেও রংপুরকে পরাজয়ের স্বাদ দিল রাজশাহী। তবে, এই জয়টা রাজশাহীর জন্য বিশেষ। কারণ কোনো বিদেশি ক্রিকেটার ছাড়াই খেলতে হয়েছে তাদের। এই জয়ে প্লে-অফের স্বপ্ন জিইয়ে রইলো তাসকিনদের।
পারিশ্রমিক জটিলতায় মাঠে আসেননি রাজশাহীর কোনো বিদেশি ক্রিকেটার। যার ফলে বিশেষ আইনে তাদের খেলার অনুমিত দেয় বিসিবি। ম্যাচের আগে এমন নাটকীয়তার পর টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১১৯ রান জড়ো করে রাজশাহী। জবাবে, ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৭ রানে থামে রংপুর। ২ রানের নাটকীয় জয় পায় রাজশাহী। দলটির হয়ে বল হাতে মাত্র ১৮ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের চারে ওঠে এসেছে রাজশাহী।
১২০ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে খুবই বাজে শুরু করে রংপুর। প্রথম ওভারেই বিদায় নেন ওপেনার স্টিভেন টেইলর। ৪ বলে ২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। শুরুর চাপ সামাল দিতে পারেননি আরেক ব্যাটার সাইফ হাসান। ৩ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। চোট কাটিয়ে ফেরা সৌম্য সরকারও পারেননি আস্থার প্রতিদান দিতে। দলীয় ২৩ রানের মাথায় ফেরেন তিনিও। ১৩ বলে ৮ রান আসে সৌম্যর ব্যাট থেকে। এরপর স্কোরবোর্ডে ৭ রান যোগ করতে রংপুর হারায় আরও তিন ব্যাটার। ৩০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে দলটি।
ছোট লক্ষ্যও দলটির কাছে তখন পাহাড়সম মনে হচ্ছিল। দলকে খাদের কিনারা থেকে টেনে তোলার দায়িত্বটা নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও খুশদিল শাহ। তবে, সেই জুটিও রাজশাহীর দাপুটে বোলিংয়ের সামনে টেকেনি। ১৮ বলে ১০ করে সাজঘরে ফেরেন খুশদীল। শেষ ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২৫ রান। হাতে ছিল ২ উইকেট। ব্যাট হাতে দুই ছয় হাঁকিয়ে জয়ের আশা জাগালেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি সাইফউদ্দিন।
এর আগে, ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি রাজশাহীর। দলের খাতায় ১১ রান যোগ হতেই বিদায় নেন ওপেনার জিসান আলম। ৩ বলে ২ রান করে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বলে বোল্ড হন তিনি। এরপর দ্রুতই বিদায় নেন আরেক ব্যাটার সাব্বির হোসেন। ১৩ বলে ১১ রান করে ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে গিয়ে স্টাম্পিং হন এ ব্যাটার। উপরে ব্যাট করতে নেমে ১০ বলে ১০ রান করে আউট হন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। দলের হাল ধরতে পারেননি এনামুল হক বিজয়ও। ১৬ বলে ১৩ রান করে আউট হন তিনি।
তাতে ৬৭ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে কঠিন বিপর্যপে পড়ে রাজশাহী। শেষদিকে আকবর আলী, তাসকিন আহমেদ ও সানজামুলের ব্যাটে ভর করে ১১৯ রান দাঁড় করায় রাজশাহী। সহজ লক্ষ্য মনে হলেও, তা তাড়া করতে নেমে যে এভাবে ভেঙে পড়বে রংপুর তা হয়তো কেউ স্বপ্নেও ভাবেনি। রংপুরের হয়ে ৪ ওভার বল করে মাত্র ১৯ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন খুশদিল শাহ। ২টি করে উইকেট নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও রাকিবুল হাসান।