বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট
গলের সুখস্মৃতি ফেরাতে পারবে বাংলাদেশ?

নতুন মিশনে নতুন শুরুর প্রত্যয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। সেই লক্ষ্যে আগামীকাল মঙ্গলবার (১৭ জুন) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটি গলে মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ের ১০টায়।
বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার এই টেস্ট সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (২০২৫-২০২৭) চতুর্থ আসর। প্রথম দুই আসরে সাফল্য না পেলেও সর্বশেষ আসরে কিছুটা উন্নতি করেছিল বাংলাদেশ। ২০২৩-২০২৫ চক্র (তৃতীয় আসর) শেষ করেছিল সপ্তম স্থানে থেকে। সেবার ১২ ম্যাচ খেলে নাজমুল হোসেন শান্তর দল জিতেছিল ৪টি ম্যাচ। চতুর্থ আসরে জয়ের সংখ্যা আরও বাড়ানোর লক্ষ্য অধিনায়কের।
তবে লঙ্কানদের বিপক্ষে বাংলাদেশকে দিতে হবে কঠিন পরীক্ষাই। বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স অন্তত তাই বলছে। বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দল। জ্বলে উঠতে পারছে না ক্রিকেটাররা। গত বছর পাকিস্তানকে সিরিজ হারানোর পরে পাঁচটি টেস্ট সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে তিনটিতেই হেরেছে টাইগাররা। বাকি দুই সিরিজে করেছে ড্র।
সর্বশেষ ঘরের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচ হারের পরে দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছিল ফিল সিমন্সের শিষ্যরা। লঙ্কান সিরিজে সেখান থেকেই আত্মবিশ্বাস নিতে চান অধিনায়ক শান্ত।
তবে শান্ত আত্মবিশ্বাস খুঁজলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পরিসংখ্যান বলছে ভিন্ন কথা। সেখানে একচেটিয়া আধিপত্য লঙ্কানদের। এপর্যন্ত লঙ্কানদের বিপক্ষে মোট ২৬টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে জয় মোটে একটি ম্যাচে। হেরেছে ২০টি ম্যাচ আর পাঁচটি ম্যাচে করেছে ড্র।
বাংলাদেশের জন্য আশার আলো গল স্টেডিয়াম। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ যে টেস্ট ম্যাচটি জিতেছে, সেটার ভেন্যু ছিল এই গল স্টেডিয়াম। ২০১৭ সালে বাংলাদেশের শততম টেস্ট ম্যাচে গলে লঙ্কানদের হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেটাই হতে পারে বাংলাদেশের জন্য অনুপ্রেরণা।
অবশ্য সেই জয়ের স্বাদ নেওয়া মাত্র তিনজন ক্রিকেটার আছে বর্তমান দলে। এরমধ্যে মুশফিকুর রহিম আর তাইজুল ইসলামকে নিয়ে সংশয় না থাকলেও মেহেদী হাসান মিরাজ খেলতে পারবেন কিনা সেটিই এখন বড় প্রশ্ন। শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার পর থেকেই জ্বরে ভুগছেন তিনি। তবে মিরাজকে পেতে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায় দল।
শেষ পর্যন্ত যদি মিরাজকে না পাওয়া যায়, তাহলে বাংলাদেশের জন্য বেশ দুশ্চিন্তার কারণ হবে সেটি। কারণ বর্তমানে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন মিরাজ। গত এক বছরে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এবং উইকেট শিকারী তিনি। ৫৯৮ রান করার পাশাপাশি ৪১ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
বাংলাদেশের সমস্যা আছে ব্যাটিং অর্ডার নিয়েও। ওপেনিং জুটি নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। সেটি অবশ্য আগামীকালের জন্য রহস্য হিসেবে তুলে রেখেছেন শান্ত।
গলের পূর্ব অভিজ্ঞতা বলছে, এখানে স্পিনাররা একটু বাড়তি সুবিধা পায়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ তিন স্পিনার আর দুই পেসার নিয়ে মাঠে নামতে পারে। তাইজুল ইসলামের খেলা নিশ্চিত। মিরাজ খেললে তার সঙ্গে দেখা যেতে পারে হাসান মুরাদকে। মিরাজ না খেললে অবশ্য ভিন্ন অঙ্ক কষতে হবে বাংলাদেশকে।
অন্যদিকে, বোলারদের দাপটের উইকেটে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে ব্যাটারদেরও। দায়িত্ব নিতে হবে অভিজ্ঞ তারকাদের।