পাবনার তরুণের স্মার্ট হুইলচেয়ার

অ্যান্ড্রয়েড চালিত স্মার্টফোনেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় হুইলচেয়ার। আবার ওই হুইলচেয়ারে বসে থাকা ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে পড়লে বার্তা পৌঁছে যায় স্বজনদের কাছে। স্মার্ট হুইলচেয়ারটি তৈরি করেছেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তরুণ দেবনাথ। আর এর স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকায় অনুষ্ঠিত দেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর এক প্রতিযোগিতায় বিশেষ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেছে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ‘অ্যানড্রয়েড ফোন কন্ট্রোলড স্মার্ট হুইলচেয়ার ফর ডিজ্যাবিলিটি’ প্রকল্পের আওতায় তরুণ দেবনাথ স্মার্ট হুইলচেয়ারটি তৈরি করেন। ‘অ্যানড্রয়েড ফোন কন্ট্রোলড স্মার্ট হুইলচেয়ার ফর ডিজ্যাবিলিটি’ প্রকল্পের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন এবং সুপারভাইজার হিসেবে ছিলেন সহকারী অধ্যাপক আ ফ ম জয়নুল আবেদীন।
হুইলচেয়ারটি মূলত শারীরিক প্রতিবন্ধী এবং পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। এটি স্মার্টফোনের মাধ্যমে খুব সহজেই পরিচালনা করা যায়। আর চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিটি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তাঁর স্বজনদের কাছে বার্তা পৌঁছে যায়।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তরুণ দেবনাথ বলেন, ‘এই ধরনের চেয়ার বিদেশ থেকে আমদানি করতে গেলে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়। সেখানে আমরা এটি তৈরি করেছি মাত্র ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকায়। দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্মার্ট হুইল চেয়ার দেশের মানুষের ক্রয়সীমার মধ্যে নিয়ে আসা সম্ভব।
গত ১১ জুন রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউিট মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক ইঞ্জিনিয়ারিং ইনোভেশন সামিট উপলক্ষে রোবট ও ড্রোন নিয়ে এক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। সামিটের আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এখানে ৫০টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০টি স্কুল-কলেজের ২০০টি দল অংশ নেয়। এখানে ‘ইন্টারন্যাশনাল রোবটস গট ফ্রিডম’ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করে তরুণ দেবনাথের স্মার্ট হুইলচেয়ারটি।
ব্যতিক্রমধমী উদ্ভাবনার জন্য পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের আল নকীব চৌধুরী তরুণ দেবনাথকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ রকম উদ্ভাবনীর মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে বলে তিনি আশা করেন।