আর্মেনীয় হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিলেন জো বাইডেন
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2021/04/25/biden.jpg)
শত বছর আগে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অটোমান তুর্কিদের হাতে আর্মেনীয় জনগোষ্ঠীর নির্বিচারে প্রাণ হারানোর ঘটনাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘গণহত্যার’ স্বীকৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্ট এ স্বীকৃতি দিলেন। সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর দিয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের এমন সিদ্ধান্ত ‘পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান’ করেছে তুরস্ক।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুসোওগলু গতকাল শনিবার টুইট করেন, ‘আমাদের ইতিহাসের বিষয়ে কারও কাছ থেকে শিখব না আমরা।’
এ ছাড়া তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আঙ্কারার ‘তীব্র প্রতিক্রিয়া’ জানাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠিয়েছে।
সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছিল, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সঙ্গে সাম্প্রতিক ফোনালাপে আর্মেনীয় গণহত্যার প্রসঙ্গটি সামনে আনেন জো বাইডেন। গত জানুয়ারিতে বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করার পর এই প্রথম দুই নেতা কথা বললেন।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/infograph/public/images/2021/04/25/armenia-inside.jpg 687w)
এ ছাড়া বাইডেন দু-একদিনের মধ্যে এ বিষয়ে একটা ঘোষণা দিতে পারেন বলে গত শুক্রবার সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেলিনা পোর্টার। তিনি বলেছিলেন, ‘আর্মেনিয়ান গণহত্যার বিষয়ে আগামীকাল ঘোষণা আসতে পারে।’
১৯১৫ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত অটোমান সাম্রাজ্যে প্রায় ১৫ লাখ আর্মেনিয়ান প্রাণ হারান। বাইডেনই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট, যিনি বিষয়টিকে ‘গণহত্যার’ স্বীকৃতি বিষয়ে কথা বললেন।
তুরস্ক প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ওই ঘটনার বিষয়ে দায় স্বীকার করলেও ‘গণহত্যা’ বলতে নারাজ।
১৯১৫ সালের ২৪ এপ্রিল অটোমান সরকারের শত্রু বলে সন্দেহে আর্মেনীয় সম্প্রদায়ের কয়েকশ নেতা ও বুদ্ধিজীবীকে কনস্টান্টিনোপলে (বর্তমান ইস্তাম্বুল) বন্দি করা হয়। পরবর্তী সময়ে তাদের বেশিরভাগকেই হত্যা ও নির্বাসিত করা হয়। আর্মেনীয়রা ২৪ এপ্রিল দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। দীর্ঘদিন থেকে ওই হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের জন্য চাপ দিয়ে আসছে তারা।
জো বাইডেন সিনেটর থাকাকালে আর্মেনীয়-মার্কিনি এবং গ্রীক-মার্কিনি সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়েছিলেন। এ ছাড়া তিনি তাঁর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনি প্রচারের সময় আর্মেনীয় গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন।
তবে তুরস্ক বরাবরই বলে আসছে যে, তৎকালীন অটোমান সাম্রাজ্যে যে আর্মেনীয়দের জাতিগত হত্যা ও বহিষ্কার করা হয়েছিল, তা গণহত্যা নয়, বরং তা ছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ব্যাপক সংঘাতের ফল।