এক টিকেটেই কোটিপতি!

রুপালি পর্দায় তারকাদের হুটহাট লটারি জিততে দেখে আফসোস হয়নি, এমন মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। তবে অভিনয় আর বাস্তব জীবনের বিস্তর ফারাক দেখা যায় জনসাধারণ যখন লটারির টিকেট কেনে। অনেক সময়ই নিজেদের লোকদের পুরস্কার বুঝিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এবার ভারতে অবশ্য যা ঘটল, তাতে চক্ষু চড়কগাছ অনেকেরই। এক লটারির টিকেট কিনেই যে কোটিপতি হয়েছেন দেশটির তিনজন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজের প্রতিবেদনে জানা যায়, লটারিতে একের পর এক বাজিমাত করে দেখাচ্ছেন ভারতের জনসাধারণ। এরই মধ্যে দেশটির পূর্ব বর্ধমানে লটারির বদৌলতে দুজন কোটিপতি হয়েছেন, তা আবার মাত্র এক মাসে। আর সর্বত্র ঝড়ের বেগে এই খবর চাউর হওয়ার পর যা হওয়ার ঠিক তা-ই হয়েছে। জেলাজুড়ে হু হু করে বাড়ছে লটারি কেনার ধুম। গত কয়েকদিনে লটারির বিক্রি বেড়েছে ২৫ শতাংশ। বিক্রেতারাও এর কারণ হিসেবে গত অল্প সময়ের ব্যবধানে দুজনের বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারটিকে উল্লেখ করেছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, গত ডিসেম্বরের ১৪ ডিসেম্বর লটারিতে এক কোটি টাকা পান ভারতের পূর্বস্থলীর দিনমজুর সুদেব দাস। চমকের শুরু এখান থেকে হলেও এর পর ধাপে ধাপে এসেছে চমক। সুদেবের জয়ের মাস না পেরোতেই ফের কোটি টাকার পুরস্কার জিতে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ইন্দ্রনারায়ণ সেন। তিনি পুরস্কার জেতার পর সর্বত্র হিড়িক পড়ে যায় লটারির টিকেট কেনার। স্থায়ী দোকানের পাশাপাশি মৌসুমি বিক্রেতারাও এই সুযোগে দেদারসে বিক্রি করছেন টিকেট। ক্রেতাদের সাড়াও মিলছে প্রচুর। অনেকেই মনে করছেন, লটারির পুরো প্রক্রিয়াটি স্বচ্ছ হওয়াতেই একের পর এক পুরস্কার পাচ্ছেন ক্রেতারা।
এরই মধ্যে পুরস্কারের অর্থ দিয়ে নতুন বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন বাসুদেব। এর আগে ভাঙা বাড়িতে থাকতেন তিনি। ইন্দ্রনারায়ণ অবশ্য পুরস্কারের অর্থ আপাতত ব্যাংকে রেখেছেন। অবসরপ্রাপ্ত এই সরকারি কর্মকর্তা পুরস্কারের অর্থ দিয়ে কী করবেন, সেই সিদ্ধান্ত নেননি এখনো।
তাতে অবশ্য টিকেট বিক্রিতে ছেদ পড়েনি একটুও। শুধু বর্ধমান নয়, একই চিত্র দেখা যাচ্ছে নদীয়ার রানাঘাটেও। নতুন বছরের প্রথম দিনেই ভাগ্য সুপ্রসন্ন হয়েছে গাংনাপুরের স্থানীয় এক কলেজছাত্রের। নাগাল্যান্ড সরকারের নিউইয়ার বাম্পার কোম্পানির লটারির টিকেট কিনেছিলেন তিনি। ৩০০ টাকায় একই সিরিজের ২৫টি টিকেট কেটে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। কেননা পুরস্কারের এক কোটি রুপি মাত্র দুই ঘণ্টার মধ্যেই তুলে দেওয়া হয়েছে তাঁর হাতে।
পুরস্কার জেতার পর ওই কলেজছাত্রের মর্মান্তিক জীবনকাহিনিও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে। শৈশবে বাবাকে হারানো ওই কলেজছাত্র মাকেও হারান অল্প বয়সেই। এরপর থেকে দুই ভাইবোনের দিন পার হতো কোনোমতে। তবে ভাগ্য বদলে যাওয়ার পরে এখন ধুমধাম করেই একমাত্র বোনের বিয়ে দিতে চাচ্ছেন ওই ছাত্র। পাশাপাশি নিজেও উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে চান তিনি।