কংগ্রেসে ক্ষমতা বাড়ছে প্রিয়াঙ্কার

ভারতের জাতীয় কংগ্রেসে এবার ক্ষমতা বাড়ছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রার। একদিকে রাহুল গান্ধীর ‘অনুপস্থিতি’, অন্যদিকে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বয়সজনিত অসুস্থতা। সব মিলিয়ে ইদানীং দলে অনেক বেশি দায়িত্ব সামলাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।
কংগ্রেসের দলীয় সূত্রের খবর, দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ও আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে লড়াই করার গুরুদায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে পারেন প্রিয়াঙ্কা। এর আগে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পদ দিয়ে পূর্ব ও উত্তরপ্রদেশের দায়িত্ব দিয়েছিল দল। গত লোকসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে সাধ্যমতো প্রচার করেছেন প্রিয়াঙ্কা।
গত কয়েক মাসে বিভিন্ন ইস্যুতে বারবার ছুটে গিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশে। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সরকারের বিরুদ্ধে নিয়মিত সরব থেকেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। কিন্তু এবার প্রিয়াঙ্কার দেখা মিলছে দিল্লি কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে।
টানা ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টির কাছে হেরে দিল্লির মসনদ হারিয়েছে কংগ্রেস। আচমকা শীলা দীক্ষিতের মৃত্যুর পর দিল্লিতে কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা ও যোগ্য নেতৃত্বের অভাব দেখা দিয়েছে। এদিকে আর মাত্র মাস চারেক পর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। তাই রাজধানীতে লড়াই শুরুর আগেই দলকে ঘুরে দাঁড় করাতে ময়দানে নেমেছেন প্রিয়াঙ্কা।
দিল্লি প্রদেশ কংগ্রেসের নতুন সভাপতি হয়েছেন সুভাষ চোপড়া। কংগ্রেস সূত্রের খবর, সুভাষকে ‘ডু অ্যান্ড ডোন্টস’ বুঝিয়ে দিচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা নিজেই। গত মঙ্গলবার সুভাষ ও তাঁর টিমের সঙ্গে একপ্রস্থ বৈঠক করেছেন প্রিয়াঙ্কা। বৈঠকে দিল্লির নেতাদের কতগুলো ইস্যু নিয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের নির্দেশ দিয়েছেন। পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ও বায়ুদূষণ ইস্যুতে আরো বেশি সরব হতে বলেছেন প্রিয়াঙ্কা। নিজেও টুইট করেছেন। পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদের ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা।
প্রিয়াঙ্কার নির্দেশে গত বুধবার থেকেই রাস্তায় নেমেছে দিল্লির যুব কংগ্রেস। দূষণ রুখতে বিভিন্ন স্লোগান সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদি ও কেজরিওয়াল সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছে কংগ্রেস।
তবে অদূর ভবিষ্যতে প্রিয়াঙ্কাকে আরো সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাবে কি না, সেটাই রাজনৈতিক মহলে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেকে মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির দায় মাথায় নিয়ে দাদা রাহুল গান্ধী সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর পর মা সোনিয়া গান্ধী দলের অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব সামলালেও শারীরিক কারণে বেশি ধকল সইতে পারছেন না সোনিয়া। যার ফলে কংগ্রেস দলে কার্যত নেতৃত্বের সংকট দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় কয়েক মাস ধরেই দলে প্রিয়াঙ্কার প্রয়োজনীয়তা বেড়েছে।