করোনা আতঙ্কের মাঝেই বাঙালি প্রেমিকের সঙ্গে চীনা তরুণীর বিয়ে
ভালোবাসা যেকোনো শক্তির কাছেই মাথা নত করে না, তা আরো একবার প্রমাণিত হলো। মরণঘাতী করোনাভাইরাসের আতঙ্কও হার মানল ভালোবাসার কাছে। এমনই প্রেমের টান, সব বাধা পেরিয়ে অবশেষে পরিণতি পেল শাশ্বত প্রেম। হিন্দু ধর্মের রীতি মেনে অগ্নিসাক্ষী রেখে, সাত পাক ঘুরে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেন চীনের গুয়াংজির তরুণী জিয়াকি এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথির পারুলিয়া গ্রামের যুবক পিন্টু মাইতি।
করোনাভাইরাস ত্রাসে এখন বন্ধ ভারত ও চীনের দরজা। সেখানে দাঁড়িয়ে সব বাধা অতিক্রম করে, কয়েকদিন আগে বাঙালি প্রেমিককে বিয়ে করতে চীন থেকে ছুটে আসেন জিয়াকি। এই আসা যেন একটু অন্য রকমের। ভৌগোলিক অবস্থান, আত্মীয় স্বজন, পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, ভাষার দূরত্ব সব কিছুকে পেছনে ফেলে প্রেমিক পিন্টুর সঙ্গে গত বুধবার সারা জীবনের জন্য বাঁধা পড়লেন তিনি।
করোনাভাইরাসের দাপটের কারণে এই বিয়ের সাক্ষী হতে পারেননি জিয়াকির পরিবার ও পরিজনরা। তবে নিজেরা সুস্থ আছেন খবর পাঠিয়ে, জিয়াকিকে বিয়ের পিঁড়িতে বসার সম্মতি পাঠান তাঁরা। বিয়ের পর নবদম্পতিকে শুভেচ্ছাও জানান তাঁরা। বিয়ের আসরে নিজের মা-বাবাকে কাছে না পেয়ে কষ্ট ছিল জিয়াকির মনে।
যদিও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের আন্তরিকতায় সে বেদনা মিলিয়ে যায় জিয়াকির মন থেকে। বিয়ের আসরে তিনি চীনা পোশাক বদলে লাল বেনারসি, চেলি, কপালে চন্দন ও মাথায় টিপ পরে বাঙালি সাজে সেজেছিলেন। ছাঁদনাতলায় মালাবদল সারতে সারতে ঠোঁটে দেখা যায় হাসির ঝিলিক। বাংলাতে জিয়াকি বলে ওঠেন, ‘এভাবে বিয়ে করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।’
তবে আইনি বিয়ে মেটাতে চীনে যেতে হবে জিয়াকি ও পিন্টুকে।
জিয়াকি বলেন, ‘আমার পরিবার এই বিয়েতে খুবই খুশি। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তারা আমার বিয়েতে আসতে পারেনি। চীনে ফিরেই রেজিস্ট্রি করে বিয়েপর্ব সম্পূর্ণ করব।’