খেরসোনে ইউক্রেনের জন্য রাশিয়ার ফাঁদ?
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2022/10/29/raashiyyaa.jpg)
ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চল থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নিতে গত কয়েকদিন যাবৎ ক্রেমলিন বেশ জোড়ালো অবস্থান নিয়েছে। বেলজিয়ামের সমান আকারের খেরসোন প্রদেশটি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর অধিকৃত ক্রিমিয়া উপদ্বীপে প্রবেশের দ্বার হিসেবে কাজ করে আসছে।
প্রমত্তা দিনিপার নদীর কারণে বিচ্ছিন্ন খেরসোন হচ্ছে রাশিয়ার দখল করা ও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়া অঞ্চল যেখানে মস্কো দশ হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছিল। রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত দিনিপারের পশ্চিম তীর বিশেষ কারণে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই এলাকাটি থেকে রাশিয়া উত্তর ও পশ্চিম অঞ্চলে সৈন্য পাঠাতে বিশেষ সুবিধা পাবে।
তবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইউক্রেনের সৈন্যরা পশ্চিম তীরের গ্রাম ও শহরগুলোতে তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে এবং হামলা চালিয়েছে সেতু, ফেরি, পন্টুন প্রভৃতি স্থাপনা লক্ষ্য করে।খবর আলজাজিরার।
এদিকে, গত দশদিন ধরে মস্কো ও তাদের বসানো পুতুল প্রশাসন সেখানকার দশ হাজার বেসামরিক লোকজনকে পশ্চিম তীর ছেড়ে ক্রিমিয়া ও রাশিয়ার মূল ভূখন্ডে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়ে আসছে। তারা দাবি করছে ৭০ হাজার বেসামরিক লোকজন স্বেচ্ছায় এলাকা ছেড়েছে এবং এ জন্য তারা ওই সব লোকজনকে রাশিয়ার যে কোনো এলাকায় বসবাস করতে সার্টিফিকেট দিচ্ছে।
মস্কো বলছে ওই এলাকাকে বন্যার পানিতে ভাসিয়ে দিতে ইউক্রেন নোভা কাখোভকা এলাকার বাঁধটিতে বোমা বর্ষণের পরিকল্পনা করছে। তবে কিয়েভ এই অভিযোগ বাতিল করে দিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার এই তৎপরতাকে রাশিয়ার ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তৈরি করা ফাঁদ হিসেবে অভিহিত করেছেন। ইতালির একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে জেলনস্কি বলেন, ‘তাদের সবচেয়ে ভালো প্রশিক্ষিত সৈন্যরা সেখানে আছে। আমরা এসব দেখছি তবে তাদের বিশ্বাস করি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চাকুরিজীবী বলেন, ‘রাশিয়া এসব করছে ইচ্ছাকৃতভাবেই একটি বিশেষ অবস্থা তৈরি করতে ও গণমাধ্যমে শোরগোল তুলতে।’ তার ভাষায় এরকম একটি কৌশলগত জায়গা থেকে রাশিয়ার সরে যাবার কোনো আশা নেই। ইউক্রেনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের এখন চিন্তা করা উচিত খেরসোনের ফ্রন্টলাইনের সেনাদের অবস্থানের বিষয়ে।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2022/10/29/raashiyyaa-skrinn-shtt.jpg)
গোয়েন্দা তথ্য ও স্যাটেলাইটের ছবি অনুসারে দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে রাশিয়া খেরসোন আঞ্চলিক রাজধানীটি ও তার পাশের নোভা কাখোভকা শহর জুড়ে প্রতিরক্ষমূলক ব্যবস্থা তৈরি করছে। এ বিষয়ে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর উপ প্রধান বলেন, ‘বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার কৌশলিটি একটি প্রপাগান্ডা ছাড়া আর কিছুই নয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে তারা সৈন্য সংখ্যা বাড়াতে ও নিজেদের শক্তি বাড়াতে কাজ করছে যাতে তারা পাল্টা আক্রমণ করতে পারে।’