তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহত ২০ হাজার ছুঁইছুঁই

তিন দিন আগের ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়া। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশ দুটিতে বাড়ছে লাশের সংখ্যা। ঠান্ডা, ক্ষুধা ও লক্ষাধিক লোক গৃহহীন হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেশ দুটিতে নিতের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার ছুঁইছুঁই। ইতোমধ্যে ১৬ হাজার ৫৪৬ জনের মৃত্যু কথা জানিয়েছে তুরস্ক। অন্যদিকে, তিন হাজার ৩১৭ জনের কথা নিশ্চিত করেছে সিরিয়িা। খবর রয়টার্সের।
বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের তথ্য জানিয়ে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েফ এরদোয়ান বলেছেন, ‘মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১৬ হাজার ৫৪৬-এ।’ আর সিরিয়ার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, বিরোধী নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় কমপক্ষে এক হাজার ৯৩০ জন নিহত হয়েছে। আসাদ সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকার এক হাজার ৩৪৭ নিহত হয়েছে।
১৯৯৯ সালে তুরস্ক ও সিরিয়ায় এক ধরনের ভূমিকম্প হয়েছিল। সেই সময়ে দুদেশ মিলে মারা গিয়েছিল ১৭ হাজারের বেশি। তবে এবারের ভূমিকম্প সেই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে।
এদিকে, ভূমিকম্পের ৭৯ ঘণ্টা পর তুরস্কের হাতায়ের একটি ধ্বংসাবশেষের নিচ থেকে দুই বছরী এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই জীবিত উদ্ধার উদ্ধারকারীদের মধ্যে নতুন করে আশা জাগিয়েছে।
উদ্ধারকাজ চালাতে বেশ বেগ পোহাতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তুরস্কের এক কর্মকর্তা। ধীর গতির উদ্ধারকাজের সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে এরদোয়ানকে। ওই কর্মকর্তার মতে, ১৪ মে’র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগ মুহূর্তে ভূমিকম্প নিয়ে এরদোয়ান বিপাকে রয়েছেন। দুই দশকের ক্ষমতাকালে এমন কঠিন সময়ের মুখে পড়তে হয়নি বর্তমান প্রেসিডেন্টকে।
ভূমিকম্পের তিন দিন পর তুরস্ক সীমান্ত পাড়ি দিয়ে জাতিসংঘের সাহায্যের একটি যান সিরিয়ায় পৌঁছেছে।
রয়টার্স বলছে, ভূমিকম্পে দুদেশের লাখ লাখ লোককে গৃহহীন করে ফেলেছে। শীতের মধ্যেই রাস্তার পাশে কোনোরকমে থাকছে তারা। অনেকে সুপারমার্কেটের পার্কিং এরিয়া, মসজিদ বা ধ্বংসাবশেষের মধ্যে অস্থায়ী ক্যাম্প করে সেখানে থাকছে। সেখানে খাবার ও সুপেয় পানির অভাব রয়েছে। শীতে কষ্ট করছেন তারা।
ভূমিকম্পে ছয় হাজার ৫০০ ভবন ধ্বংস হয়েছে বলে জানিয়েছে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ। আর অগণিত ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুর্কি কর্মকর্তারা বলছেন, পশ্চিম আদানা থেকে পূর্ব দিয়ারবাকির ৪৫০ কিলোমিটার বিস্তৃত এলাকার প্রায় এক কোটি ৩৫ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সিরিয়ায় জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ কার্যক্রম বিষয়ক আবাসিক সমন্বয়ক এল-মোস্তফা বেনলামলিহ বলেছেন, ভূমিকম্পে এক কোটি ৯ লাখ সিরিয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জাতিসংঘে নিযুক্ত সিরিয়া দূত সরকারের সক্ষমতা এবং সরঞ্জামের অভাবের কথা স্বীকার করেছে। তবে এ জন্য তিনি যুদ্ধ ও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করছে।