ত্রিপুরায় পৌর নির্বাচনে বিজেপির ভূমিধস জয়

ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরা পৌরসভা ভোটে গেরুয়া ঝড়ে উড়ে গেল বিরোধীরা। আগরতলা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনেও জয় পেয়েছে বিজেপি। রোববারের গণনায় আগরতলা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনসহ ২০টি পৌর ও নগর সংস্থার নির্বাচনে প্রতিটিই নিজেদের দখলে নিল বিজেপি।
ত্রিপুরা রাজ্যের ২০টি পৌর ও নগর সংস্থার মধ্যে আগরতলা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন, ১৩টি পৌর পরিষদ ও ছয়টি নগর পঞ্চায়েত মিলিয়ে মোট ৩৩৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৩২৯ টিতে জয় পায় বিজেপি। বামেরা জয় পেয়েছে তিনটি ওয়ার্ডে, তৃণমূল একটিতে এবং ত্রিপুরা ইন্ডিজিনাস প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স (টিআইপিআরএ) একটি ওয়ার্ডে জয় পেয়েছে।
এর মধ্যে আগরতলা করপোরেশনে ক্লিন সুইপ বিজেপির। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বামেদের কাছ থেকে এই করপোরেশন ছিনিয়ে নিল গেরুয়া শিবির। এই করপোরেশনের ৫১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫১ টিতেই জয় পায় বিজেপি। ফলে বিরোধী দল বাম কিংবা তৃণমূল কংগ্রেসকে কার্যত খালি হাতে ফিরতে হয়েছে।
অন্যদিকে, নগর পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ভালো ফল করেছে ক্ষমতাসীন দল। ছয়টি নগর পঞ্চায়েতের প্রতিটিতেই জয় পায় বিজেপি। আবার ১৩টি পৌর পরিষদের মধ্যে ১৩টিতেই জয় পায় বিজেপি। ত্রিপুরায় বিজেপির জয়ের পরই রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব ও রাজ্যের মানুষকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী প্রমুখ। অন্যদিকে এই জয়ে বিজেপিকে নিশানা করে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘ত্রিপুরায় কোনো গণতন্ত্র নেই। সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি। নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে। ওখানে গুন্ডারা নির্বাচন করিয়েছে, একচেটিয়া হয়েছে। সেখানে তৃণমূলকে প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। ভারতের মানুষ হিসেবে আমরা সকলেই এই ঘটনায় লজ্জিত।’
উল্লেখ, ত্রিপুরা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, গত ২৫ নভেম্বর ভোট হওয়ার কথা ছিল আগরতলা করপোরেশনসহ ২০টি পৌর ও নগর সংস্থার ৩৩৪টি ওয়ার্ডে। কিন্তু এর মধ্যে সাতটি পৌর পরিষদের ১১২টি ওয়ার্ডে অন্য কোনো রাজনৈতিক দল প্রার্থী না দেওয়ায়, আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ওই পৌর পরিষদগুলোতে জয়ী হয়েছে বিজেপি। ফলে ২৫ নভেম্বর আগরতলা পৌরসভার ৫১টি ওয়ার্ডসহ মোট ২২২টি ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ হয়।
বিক্ষিপ্ত কয়েকটি সহিংসতা ছাড়া নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী গড়ে ভোট পড়ে ৮১.৫৪ শতাংশ। রোববার ছিল তার গণনা। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় গণনা। প্রতিটি গণনাকেন্দ্রেই ছিল নিরাপত্তা বলয়।
তবে প্রথমবারের মতো লড়াই করে ভালো চমক দেখিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগরতলা কর্পোরেশনসহ ২০টি পৌর ও নগর সংস্থার একাধিক ওয়ার্ডে তারা দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে।