দরিদ্রদের জন্য ১ লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা ভারতের

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। মোট এক লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্তের চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ৫০ লাখ রুপির বিমা ঘোষণা করেছেন দেশটির অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। এ বিমার আওতায় আসবেন করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্যারামেডিকেল কর্মচারীরা। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যাঁরা কাজ করে যাচ্ছেন, তাঁদের প্রত্যেকের জন্য ৫০ লাখ রুপি করে বিমার ঘোষণা করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আগামী তিন মাসের জন্য এই বিমা কার্যকরী হবে।
ভারতের অর্থমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আশা করি, এ সময়ের মধ্যে আমরা করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জিততে পারব।’
ভারতে এ মুহূর্তে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। এর ফলে আর্থিক ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রভাব পড়তে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে ভারতের মানুষের জন্য আর্থিক প্যাকেজের কথা ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সরকার চায় দেশের কোনো মানুষ যেন অভুক্ত না থাকে। সবাই যেন পর্যাপ্ত খাবার কিংবা প্রোটিন পায়, তার ব্যবস্থা করছে সরকার। আগেই সস্তায় ৮০ কোটি ভারতীয়কে চাল ও আটা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার সীতারমন ঘোষণা করলেন, আগামী তিন মাস ওই ৮০ কোটি ভারতীয়কে প্রতি মাসে পাঁচ কেজি করে চাল ও আটা বিনামূল্যে দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে এক কেজি করে ডাল দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সস্তায় চাল ও গম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গতকাল বুধবার সকালে বসেছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। সে বৈঠকে ভারতের ৮০ কোটি মানুষকে কম দামে খাদ্যশস্য দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ছাড়া ভারতের সাধারণ জনগণের জন্য কম দামে মিলবে রেশন। ৮০ কোটি মানুষকে ২৭ রুপি কেজির গম দুই রুপি কেজি দরে আর ৩৭ রুপি কেজির চাল তিন রুপি কেজি দরে দেওয়া হবে। এ জন্য সরকারের খরচ ধরা হয়েছে এক লাখ ৭০ হাজার কোটি রুপি। এসব ছাড়া আজ বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত পাঁচ কেজি চাল ও আটা দেওয়ার ঘোষণাও দেওয়া হয়।
এ ছাড়া ভারতের অর্থমন্ত্রী জানান, একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়েছে। যার নেতৃত্বে থাকবেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর গরিব কল্যাণ প্রকল্পের আওতায় ৮০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে চাল ও গম পেতেন। এবার ভারতের জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে আগামী এপ্রিল থেকে গরিবদের আরো অতিরিক্ত পাঁচ কেজি গম ও চাল দেওয়া হবে। পরবর্তী তিন মাস এক কেজি করে ডাল দেওয়া হবে। খাদ্য বণ্টনের ক্ষেত্রে সমাজে বিশেষভাবে সক্ষম নারী ও জেলবন্দিদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন এদিন আরো ঘোষণা করেন, যে সব সংস্থার ১০০ জনের কর্মী এবং ১৫ হাজারের নিচে বেতন, কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ডে ২৪ শতাংশ রুপি দেবে। মালিক ও কর্মী দুই পক্ষের রুপিই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দেবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে করোনা মোকাবিলায় সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এ লকডাউন চলবে আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। নরেন্দ্র মোদির লকডাউন ঘোষণার দুদিন পরই করোনা মোকাবিলায় আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেন দেশটির অর্থমন্ত্রী।