দিল্লির মসজিদে জমায়েতে অংশ নেওয়া ৭ জনের করোনায় মৃত্যু

ভারতের রাজধানী দিল্লির নিজামউদ্দিন এলাকার একটি মসজিদে তাবলিগ জামাতের জমায়েতে থেকে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ, এমন অভিযোগ উঠেছে। যে সংক্রমণ ঠেকাতে এক রকম ব্যর্থ দিল্লির অরবিন্দ কেজরিওয়াল সরকার। ফলে দিল্লিজুড়ে এখন রীতিমতো করোনা আতঙ্ক তাড়া করে বেড়াচ্ছে মানুষকে।
জানা গেছে, দিল্লির একটি মসজিদে অনুষ্ঠিত ওই জমায়েতে যোগ দিয়ে বহু মানুষ এরই মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন সাতজন। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে দিল্লির আম আদমি সরকার। দিল্লির ওই মসজিদটি এরই মধ্যে সিল করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আরো জানা গেছে, গত ১ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে দিল্লির ওই মসজিদে অন্তত দুই হাজার মানুষের সমাগম হয়েছিল। দিল্লিতে ওই মসজিদে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও কিরগিজস্তান থেকে মানুষ এসে ওই জমায়েতে অংশ নিয়েছিল। ১০০ বছরের পুরোনো ওই মসজিদে একটি ধর্মীয় সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছিল। ১৯২৬ সালে স্থাপিত ওই মসজিদে পৃথিবীর নানা দেশ থেকে কয়েক হাজার ইসলাম ধর্মাবলম্বী অংশ নেন। সেখান থেকেই ব্যাপক হারে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
জানা যায়, ওই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর করোনায় সংক্রমণের কারণে মারা যান তেলেঙ্গানা রাজ্যের ছয়জন বাসিন্দা। মারা গেছেন জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরের এক ব্যক্তিও।
এদিকে ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে ওই জমায়েতে অংশ নেওয়া ৯ ব্যক্তির দেহে করোনা সংক্রমণের প্রমাণ মিলেছে। পাশাপাশি তাঁদের মধ্যে এক ব্যক্তির স্ত্রীর দেহেও মিলেছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রমাণ। এদিকে দিল্লির এ সংক্রমণের ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গোটা পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছেন।
একইসঙ্গে দিল্লির পশ্চিম নিজামুদ্দিনে তাবলিগ জামাতের মসজিদ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত ২২ মার্চ ‘জনতা কারফিউ’ ঘোষণা করার পর এ মসজিদে পূর্ব নির্ধারিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়। কিন্তু ততক্ষণে ওই মসজিদ চত্বরে প্রচুর মানুষের জমায়েত ছিল। তাঁরা ওই কারফিউয়ের কারণে আটকা পড়েন। তাঁদের আর অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না। আর এর পরই শুরু হয়ে যায় দেশজুড়ে লকডাউন। তাই বাধ্য হয়েই মসজিদসংলগ্ন এলাকাতেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকতে বাধ্য হন তাঁরা। ওই ঘটনার জেরেই করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে কারণে ওই মসজিদ থেকে কমপক্ষে ৮৫০ জনকে অন্য একটি জায়গায় কোয়ারান্টিন করে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। এরই মধ্যে কম করে ২০০ জনের শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে করোনার সংক্রমণ হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যেই ২৪ জনের শরীরে ওই সংক্রমণ হয়েছে বলে প্রমাণও মিলেছে। সংক্রমিতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।