দিল্লির সেই চার ধর্ষকের ফাঁসি ২২ জানুয়ারি

সাত বছর আগে চলন্ত বাসে এক মেডিক্যাল ছাত্রীকে নৃশংসভাবে ধর্ষণ ও হত্যার মামলায় আজ দোষীদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারি করেছেন দিল্লির পাটিয়ালা হাউস কোর্ট। এই ঘটনায় নিহত তরুণী ভারতে ‘নির্ভয়া’ নামে পরিচিতি পেয়েছিল - আর চাঞ্চল্যকর সেই মামলার পর ভারতে বদলে গিয়েছিল ধর্ষণের সংজ্ঞা ও শাস্তিও।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, আগামী ২২ শে জানুয়ারি সকাল ৭টায় ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত চারজন ব্যক্তি—পবন গুপ্ত, মুকেশ সিং, বিনয় শর্মা ও অক্ষয় ঠাকুর সিংকে ফাঁসিতে ঝোলানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এর আগে নির্ভয়ার পরিবার যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের ফাঁসি কার্যকর করতে পাটিয়ালা হাউস কোর্টে আর্জি জানিয়েছিলো। তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যু পরোয়ানা জারির আর্জিও জানিয়েছিলেন নির্ভয়ার মা-বাবা।
গত ১৮ ডিসেম্বর সেই আবেদনের শুনানি শুরু হলে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত রায় স্থগিত রাখেন অতিরিক্ত দায়রা বিচারক সতীশ অরোরা। সে সময় আদালতের মধ্যেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন নির্ভয়ার মা আশা দেবী।
বিচারককে তিনি প্রশ্ন করেছিলেন, ‘যেখানেই যাচ্ছি অপরাধীদের অধিকারের কথা শোনানো হচ্ছে আমাদের। আমাদের অধিকারের কী হবে?’
‘আইনের কাছে আমাদের হাত-পাও বাঁধা’, বলে সে সময় তাঁকে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন বিচারক।
তারপর আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে বিষয়টি নিয়ে শুনানি শুরু হয়। দিল্লির তিহার জেল থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারকের সঙ্গে কথা বলে চারজন দোষী। তাদের বক্তব্য শোনার পর বিকাল ৫টা নাগাদ রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লিতে চলন্ত বাসে ২৩ বছরের তরুণী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করেছিল ওই চার জন। গণধর্ষণের পর শারীরিক নিপীড়ন চালিয়ে নগ্ন অবস্থায় চলন্ত বাস থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছিল নির্ভয়াকে। নির্ভয়া ও তাঁর পুরুষ বন্ধুর উপর নৃশংস অত্যাচার চালায় তারা।
সেই মামলায় আগেই ওই চার জনকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্ট। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে ২৩ বছর বয়সী নির্ভয়াকে গণধর্ষণ করে হত্যার দায়ে ছয় আসামির মধ্যে চারজনের ফাঁসির আদেশ দেন দিল্লির ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। পরে ২০১৪ সালে দিল্লি হাইকোর্ট চারজনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন।
২০১৭ সালে সেই রায় পুনর্বিবেচনা করে দেখতে আদালতে আর্জি জানিয়েছিল অন্যতম অভিযুক্ত অক্ষয় ঠাকুর সিং। গত মাসেই অবশ্য তার সেই আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে।