দূষণে জর্জর দিল্লির রাজপথে ফের চালু জোড়-বিজোড় পদ্ধতি

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ক্রমেই বাড়তে থাকা দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে আনতে আজ সোমবার থেকে ফের জোড়-বিজোড় পদ্ধতি চালু করল দিল্লি রাজ্য সরকার। এর আগে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দুবার দিল্লিতে এ পদ্ধতি চালু করা হয়। তবে দূষণ রোধে এর কার্যকারিতা কতটুকু, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এই বিধিনিষেধ চালু থাকবে। তবে ছুটির দিন রোববার এই নিয়ম কার্যকর থাকবে না।
দিল্লি সরকার জানিয়েছে, জোড় ও বিজোড়ের এই বিধিনিষেধ থেকে রেহাই দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ চালিত গাড়িগুলোকে। দিল্লি সরকারের পরিবহনমন্ত্রী কৈলাস গেহলোট জানিয়েছেন, দিল্লিতে রেজিস্টার করা ইলেকট্রিক গাড়ির সংখ্যা এক হাজারের কম। এ কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
জোড়-বিজোড়ের নিয়মে জানানো হয়েছে, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন সংখ্যার শেষের সংখ্যা যদি জোড় হয়, তবে তা জোড় তারিখে চলবে। যদি তা বিজোড় হয়, তবে তা বিজোড় তারিখে চলবে। রাজধানী দিল্লিতে এই বিধিনিষেধ ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত চালু থাকবে।
দিল্লিতে এর তদারকি করতে এরই মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের ২০০টি দল প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দিল্লি ট্রাফিক পুলিশের বিশেষ কমিশনার তাজ হাসান।
এদিকে আজ সোমবার সকালেও দূষণের জেরে ঘন কুয়াশায় ঢাকা ছিল দিল্লি। গত শুক্রবার সকাল থেকেই ব্যাহত হচ্ছিল রাজধানী শহরের বিমানসেবা। এমনকি গতকাল রোববার দিল্লি বিমানবন্দরের ৩ নম্বর টার্মিনালে অবতরণ করতে ব্যর্থ হয় ১২টি ফ্লাইট। এই ফ্লাইটগুলোকে জয়পুর, লক্ষ্ণৌ ও অমৃতসরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। দৃশ্যমানতা কম থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়। কুয়াশার জেরে বেহাল দশা দেখা যায় দিল্লির রাজপথেও।
দিল্লির পাশাপাশি নয়ডাতেও মঙ্গলবার পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। গতকাল সকালে বৃষ্টি হওয়ায় দূষণের মাত্রা কমলেও বেলা বাড়তেই ফের বাতাসের মান নামতে থাকে। বাওয়ানা, জাহাঙ্গীরপুর, রোহিনী, সোনিয়া বিহার, শাহদরা, ওখলা, মেজর ধ্যানচাঁদ স্টেডিয়াম, আনন্দ বিহার, পাঞ্জাবি বাগ, পুসা, মন্দির মার্গ, মুন্ডকা, শ্রীনিবাসপুরি এবং জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটি এলাকায় বাতাসের গুণমান সূচক বা এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) ৯৯৯ ছাড়িয়েছে। এ ছাড়া ৯০০ ছাড়িয়েছে বেশকিছু এলাকায়। আজ সোমবার সকালে অবশ্য সেই মাত্রা কিছুটা কম। বৃষ্টির পর দূষণের মাত্রা কমে যাবে এমনটা ভাবা হলেও দেখা গেছে যে বাতাসের মান আরো খারাপ হয়ে গেছে।
আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারি বৃষ্টির পরিবর্তে হালকা বৃষ্টি হওয়াতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর জেরে বাতাসে স্যাঁতসেঁতে ভাব তৈরি হয়েছে। এই কারণে বাতাসের ভাসমান ধূলিকণাগুলো আরো ঘনীভূত হয়ে গেছে। তাতেই ঘোলাটে ভাব বেড়েছে। কমে গেছে দৃশ্যমানতাও।
তবে দিল্লির রাজপথে জোড় ও বিজোড় নম্বরের গাড়ি চালানোর নীতি চালুর ফলে দূষণের মাত্রা কতটা নিয়ন্ত্রণে আসে, সেটাই দেখার বিষয়।