নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীতায় ১১ রাজ্যে কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর চিঠি

ভারতের বিতর্কিত নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে আন্দোলনকে আরো জোরদার করতে দেশটির যে সব রাজ্যে বিজেপির নেতৃত্ব নেই, সেই ১১টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তিনি চিঠিতে লেখেন, ‘সমাজের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ উপলব্ধি করেছেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো রক্ষায় সব পক্ষকে এগিয়ে আসতেই হবে। তাই ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী যে আইন (সিএএ), তার কড়া প্রতিবাদ প্রয়োজন।’ গতকাল শুক্রবার এই চিঠি দেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
সেই চিঠিতে পিনারাই বিজয়ন আরো লেখেন, ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য ভারতের সংস্কৃতিকে মজবুত করেছে। তাই জাত-ধর্ম-বর্ণ ভেদ ঘুচিয়ে সমাজের সব অংশের মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। রক্ষা করতে হবে সংবিধানের মৌলিক ধারাকে।’
কেরালার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমাদের সংবিধান নাগরিক অধিকার ও সাম্য রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। পাশাপাশি দেশের সংবিধান, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা এবং সমান অধিকার—কাঠামোর উপর দাঁড়িয়ে। এই আইন সে কাঠামোকেই আঘাত করছে।’
এরই মধ্যে কেরালা রাজ্য বিধানসভায় প্রস্তাব এনে সিএএর উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। চিঠিতে এই পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের রাজ্য উপলব্ধি করেছে, এনআরসি আর এনপিআরের প্রস্তুতি আদতে সিএএর প্রাথমিক ধাপ। তাই আমরা সব প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দিয়েছি।’
এর আগে সিএএর বিরুদ্ধে একজোট হতে এমন একটি চিঠি ওই ১১টি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের পাঠিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আবেদন ছিল, সিএএ বিরোধী আন্দোলনের বিরোধী মঞ্চকে এক ছাতার নিচে আনা হোক এবং প্রতিবাদ আরো জোরালো হোক।
এবার একজোট হতে বললেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রীও। এরই মধ্যে এনপিআর ও এনআরসি সংক্রান্ত সব কাজের উপর স্থগিতাদেশ দিয়েছে রাজ্যটি। এনপিআরে স্থগিতাদেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গও।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ ও ঝাড়খন্ডসহ ১১টি রাজ্যে কেরালার মুখ্যমন্ত্রীর এমন চিঠি ওই রাজ্যগুলোকে স্বস্তি দেবে।