পশ্চিমবঙ্গে ভোটগণনা শুরু, তৃণমূল থাকছে না কি বিজেপি আসছে?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হ্যাটট্রিক করবেন নাকি প্রথমবার বাংলায় ফুটবে নরেন্দ্র মোদির পদ্মফুল? দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষা শেষে আজ রোববার সেই প্রশ্নের উত্তর মিলতে যাচ্ছে। ২০২১ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনা শুরু হয়েছে আজ রোববার সকাল ৮টায়।
আক্রমণাত্মক প্রচার, পাল্টা আক্রমণ, রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে ৩৩ দিন ধরে যে ভোটপর্ব চলেছে, তারপর কোন দল বাংলার মসনদে উঠবে, তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে আজ।
তবে অধিকাংশ বুথফেরত সমীক্ষায় তৃণমূল কংগ্রেসের পাল্লা কিছুটা ভারী থাকলেও লড়াই একেবারে হাড্ডাহাড্ডি হওয়ার আভাস দেওয়া হয়েছে। তবে সেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মানতে নারাজ তৃণমূল এবং বিজেপি।
ঘাসফুল এবং পদ্মফুল দুই শিবিরেরই বক্তব্য, নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠতে চলেছে তাদের দল। কত আসন মিলতে পারে, সে বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে দুই পক্ষই।
অন্যদিকে আশাবাদী বাম, কংগ্রেস এবং ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সংযুক্ত মোর্চা। বুথফেরত সমীক্ষায় ভরাডুবির আভাস দেওয়া হলেও সংযুক্ত মোর্চার বিশ্বাস, তৃণমূল এবং বিজেপির বিকল্প হিসেবে ‘ধর্মনিরপেক্ষ জোটকেই’ বেছে নিয়েছেন মানুষ। সংযুক্ত মোর্চার সেই আশা পূরণ হবে কি না, তা আর কয়েক ঘণ্টা মধ্যেই স্পষ্ট হয়ে যাবে।
এমনিতে ২৯২টি আসনে আট দফায় হয়েছে ২০২১ সালের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচন। গত ২৭ মার্চ থেকে শুরু হয়েছিল ভোট প্রক্রিয়া। যা গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুরের সংযুক্ত মোর্চার প্রার্থীদের করোনাভাইরাসে মৃত্যু হওয়ায় সেই দুই আসনে নির্দিষ্ট দিনে ভোট হয়নি। আগামী ১৬ মে সেখানে ভোট হবে। ফলপ্রকাশ হবে আগামী ১৯ মে। অর্থাৎ সার্বিকভাবে ২৯৪ আসন-বিশিষ্ট পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার ১৪৮। রোববারই কোনো দল এককভাবে সেই গণ্ডি পার করতে পারে কি না, সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।
তিন দশকের বেশি সময়ের বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে এক দশক আগে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় বসেছিল মমতা বন্দোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস। তখন তৃণমূলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল মূলত বাম ও কংগ্রেস। এবারই সরাসরি বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে বিশ্লেষকেরা বলছেন।
অথচ পাঁচ বছর আগে ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপি এই রাজ্যে মাত্র তিনটি আসনে জয় পেয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে সেই বিজেপিই ১৮টি আসন দখল করে। এরপর থেকেই বাড়তে থাকে বিজেপির জনপ্রিয়তা। তৃণমূলের অনেক সংসদ সদস্য বিজেপিতে যোগ দেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নিয়মিতই এ রাজ্যে সভা-সমাবেশ করেছেন।