বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবে উত্তরপ্রদেশ সরকার

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন ঘিরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চলমান বিক্ষোভের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয় উত্তরপ্রদেশে। রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত শিশুসহ ১৮ বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অনেকেই। যানবাহনসহ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন ভবন ও রাস্তাঘাট।
এরই মধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘোষণা দিয়েছেন, যেসব বিক্ষোভকারী রাজ্যের সম্পত্তির ক্ষতিসাধন করেছে, তাদের চিহ্নিত করে সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। এ নিয়ে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করাসহ রাজ্যের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করবেন তাঁরা।
এ ছাড়া রাজ্যের সব ধরনের ক্ষয়ক্ষতির অর্থ বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে আদায় করা হবে বলেও জানানো হয়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে আজ রোববার এ খবর জানিয়েছে।
এরই মধ্যে উত্তরপ্রদেশে গত বৃহস্পতিবার থেকে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। পুলিশসহ আহত হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এ ছাড়া দেশজুড়ে সাড়ে পাঁচ হাজার জনকে আটক করা হয়েছে। কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে ৭০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে।
এদিকে উত্তরপ্রদেশ থেকে রিভলভারসহ ৪০৫টি ভারতীয় পিস্তল জব্দ করা হয়েছে বলে দাবি করছে রাজ্য পুলিশ।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে রাজ্য সরকার। দাবি করা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি ছড়ানো হচ্ছে এমন ১৩ হাজারের বেশি অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা হয়েছে। এরই মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে উসকানি ছড়ানোয় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলেও জানা গেছে।
এদিকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে স্কুল-কলেজ।
উত্তরপ্রদেশ ছাড়াও রাজধানী নয়াদিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম, কর্ণাটকসহ বিভিন্ন রাজ্যে চলছে বিক্ষোভ।
বেড়ে চলা বিক্ষোভের মধ্যে নতুন আইন সম্পর্কে নাগরিকদের বোঝাতে জনসংযোগের পথে হাঁটার ঘোষণা দিয়েছে শাসকদল বিজেপি।
রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ থামানোর পথ খুঁজতে আইনশৃঙ্খলাজনিত বিষয়াদি নিয়ে গতকাল শনিবার মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, চলমান বিক্ষোভ হিন্দু জাতীয়তাবাদী মোদি সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় সংকটগুলোর একটি।