ভারতে আগামী ৩ মে পর্যন্ত বাড়ল লকডাউন

আজ মঙ্গলবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জাতির উদ্দেশে ভাষণে করোনা মোকাবিলায় আগামী ৩ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে ভারতে আরো ১৯ দিন বাড়ল লকডাউনের সময়সীমা। করোনাভাইরাসের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে এ ছাড়া আর উপায় নেই বলে ভাষণে উল্লেখ করেন নরেন্দ্র মোদি। দ্বিতীয় দফার লকডাউন মেনে চলার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানান তিনি। ভারতে দ্বিতীয় দফার লকডাউনে শর্ত সাপেক্ষে বাইরে বেরোনোর অনুমতি থাকছে। তবে সে শর্ত না মানলে অনুমতি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে বলে জানান মোদি।
মোদি তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন, লকডাউনের জেরে দেশের অনেক আর্থিক ক্ষতি হলেও ভারতবাসীর জীবনের দামের কাছে তা তুচ্ছ।
ভারতে করোনা মোকাবিলায় প্রথম দফায় গত ২৪ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল মধ্যরাত পর্যন্ত ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন মোদি। কিন্তু সে লকডাউন সত্ত্বেও ভারতে আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, করোনায় আক্রান্ত ১০ হাজার ৪৫৩ জন। মারা গেছে ৩৫৮ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছে এক হাজার ১৮১ জন। মোদি এদিন তাঁর ভাষণে বলেন, করোনার বিরুদ্ধে ভারতের লড়াই সফল হচ্ছে। করোনার ক্ষতি সামাল দিতে সফল হচ্ছে ভারত।
মোদি ভারতবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা সবাই কষ্ট সহ্য করেও দেশকে বাঁচিয়েছেন, ভারতবর্ষকে বাঁচিয়েছেন। কারো খাওয়ার কষ্ট, আসা-যাওয়ার কষ্ট, পরিবারের থেকে দূরে থাকার অনেক অনেক কষ্ট সহ্য করছেন। নিয়মানুবর্তী সৈনিকের মতো কর্তব্য পালন করছেন। আপনাদের সবাইকে আমার অভিনন্দন।’
মোদি বলেন, ‘আজ ভারতের অনেক রাজ্যে বাংলা নববর্ষের সূচনা। নিজেদের ঘরবন্দি রেখেই মানুষ আজ উৎসব পালন করছেন। আপনাদের সবার মঙ্গল হোক। বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে মোদি টুইটে লেখেন, ‘শুভ নববর্ষ। পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা গ্রহণ করুন। নতুন বছর আপনাদের সবার জীবনে সুখ সমৃদ্ধির বার্তা নিয়ে আসুক। সবাই সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।’
মোদি বলেন, ‘ভারতে করোনার সংক্রামণ ধরা পড়ার আগেই বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের বিমানবন্দরে স্ক্রিনিং শুরু হয়েছিল। ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। শপিং মল, রেস্তোরাঁ, সিনেমা হল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা যখন ৫০০ তখনই ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল। ভারত করোনার সমস্যা বাড়তে দেয়নি, বরং সমস্যা দেখা দিতেই কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। সারা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর তুলনায় ভারতের অবস্থা অনেক ভালো। একযোগে কাজ ও সঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়াতেই সাফল্য এসেছে।’
মোদি আরো বলেন, ভারতের প্রতিটি রাজ্যের করোনার হটস্পটগুলোর ওপর কড়া নজর রাখতে হবে। নতুন হটস্পট যেন তৈরি না হয়। আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি জেলাতে কড়া নজরদারি চালানো হবে। আক্রান্তের সংখ্যা কোথায় কত, তা নজরে রাখা হবে। তিনি বলেন, ‘ভারতে ৬০০টির বেশি হাসপাতাল করোনা যুদ্ধে শামিল। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশকর্মী থেকে সাফাইকর্মীরা নিরন্তর যুদ্ধ করে চলেছেন। তাঁদের সম্মান দিন। মোদি এদিন ভারতের যুব বিজ্ঞানীদের কাছে আবেদন করেন, করোনার ভ্যাকসিন বানানোর জন্য।’