ভারতে করোনায় আক্রান্ত ৪৪২১, মৃত ১১৪ জন

ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিদিন বেড়ে চলেছে, বাড়ছে মৃত্যুও। ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫৪ জন নতুন করে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছে। তাদের মধ্যে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৪২১ জন, মৃত ১১৪ জন। তবে এরই মধ্যে ৩২৫ জন সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছে।
ভারতে করোনার সংক্রমণ দ্বিতীয় পর্যায়ে নাকি তৃতীয় পর্যায়ে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। ভারতে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন এখনো শুরু হয়নি বলেই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে, সংখ্যাটা যেভাবে বাড়ছে, তাতে আর স্থির থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এভাবে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যেতে থাকলে লকডাউন তোলা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে যাচ্ছে। গতকাল সোমবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন আরো চিন্তা বাড়িয়েছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল সোমবার একদিনেই ভারতের আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে গেছে ৭০৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় ২৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই প্রথম একদিনে এত সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ভারতে।
করোনা পরিস্থিতির জন্য আর্থিক ধাক্কার মুখে পড়তে চলেছে ভারত। আর সে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য সব রকমের চেষ্টা জারি রেখেছে সরকার। এর মধ্যেই ভারতে বেতন কমছে সব রাজ্যের রাজ্যপালদের। প্রত্যেকেই স্বেচ্ছায় বেতন কমিয়েছেন। শুধু তাই নয়, সাংসদ তহবিলের অর্থ দেওয়ার স্কিম আপাতত দুই বছরের জন্য স্থগিত করা হচ্ছে। ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর জানিয়েছেন, সাংসদ তহবিলের সাত হাজার ৯০০ কোটি রুপি যাবে করোনা মোকাবিলা ফান্ডে। এর মধ্যেই ভারতের আর্থিক পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩০ শতাংশ বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে সাংসদদের। গতকাল সোমবার সংসদে এ সংক্রান্ত একটি অর্ডিন্যান্স পাস হয়েছে।
তবে ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, করোনায় ভারতে মোট আক্রান্ত হয়েছে চার হাজার ৭৭৮ জন। আর মারা গেছে মোট ১৩৬ জন। ভারতে করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছে ৩৭৫ জন। এখনো চিকিৎসাধীন আরো চার হাজার ২৬৭ জন ভারতীয়।
পশ্চিমবঙ্গে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮০ জন। মৃতের সংখ্যা তিন। সুস্থ হয়েছে ১০ জন। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গতকাল সোমবার বলেছেন, রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ৬১। মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
ভারতে করোনায় আক্রান্তের শীর্ষে রয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্যটি। সেখানে গতকাল সোমবার পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৪৮ জন। মৃত্যুর হিসাবেও শীর্ষস্থানে মহারাষ্ট্র। গতকাল পর্যন্ত সেখানে মারা গেছে ৪৫ জন।
ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তামিলনাড়ু। ৫৭১ জন আক্রান্ত হয়েছে এ রাজ্যে। মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। মোট আক্রান্তের সংখ্যায় তৃতীয় স্থানে রয়েছে দিল্লি। এখানে মোট আক্রান্ত ৫২৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে সাত জনের। এ ছাড়া ভারতের তেলেঙ্গানায় ৩২১, কেরালা ৩১৪, রাজস্থানে ২৭৪, উত্তরপ্রদেশে ৩০৫, মধ্যপ্রদেশে ১৬৫, কর্নাটকে ১৫১ এবং গুজরাট রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৪৪ জন।