ভারতে পশু চিকিৎসক গণধর্ষণে ৪ অভিযুক্তকে ‘গুলি করে হত্যা’

ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে আলোচিত তরুণী পশু চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা রেড্ডিকে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন চার অভিযুক্তকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ খবর জানিয়েছে।
নিহত যুবকরা হলো মোহাম্মদ আরিফ, জোল্লু শিবা, জোল্লু নবীন ও চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশাভুলু।
পুলিশের দাবি, যেখানে ওই তরুণীকে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল, আজ ভোরে ওই স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় চার অভিযুক্তকে। পরে একপর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই চার জন পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ গুলি করে। ফলে চারজনই নিহত হয়।
জানা যায়, তেলেঙ্গানা রাজ্যের হায়দরাবাদে স্কুটির চাকা পাংচারের পর তা ঠিক করার নাম করে গণধর্ষণ করা হয় পশু চিকিৎসক প্রিয়াঙ্কা রেড্ডিকে। পরে হত্যার পর তাঁকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। গত ২৯ নভেম্বর শুক্রবার এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার করা ওই চার যুবককে।
৩০ নভেম্বর শনিবার তেলেঙ্গানার শাদনগরের ম্যাজিস্ট্রেট ওই চার যুবককে ১৪ দিনের বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠায়। তবে নিহত তরুণীর পরিবারের আক্ষেপ, পুলিশ যদি দ্রুত পদক্ষেপ নিত, তাহলে বাঁচানো যেত ওই তরুণীকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ২৭ নভেম্বর বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে স্থানীয় টোল প্লাজায় প্রিয়াঙ্কাকে স্কুটি নিয়ে দাঁড়ানো অবস্থায় দেখে ছক কষে অভিযুক্ত যুবকরা। পরে প্রিয়াঙ্কার অনুপস্থিতিতে স্কুটির টায়ার পাংচার করে দেয় তারা। পরে প্রিয়াঙ্কা ফিরে এলে স্কুটি ঠিক করে দেওয়ার নাম করে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায় ট্রাকচালক আরিফ ও তার সহকারী শিবা। এর এক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করে ওই যুবকরা। জানা গেছে, পানীয়তে মদ মিশিয়ে জোর করে তাঁকে পান করানো হয়। পরে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরে প্রমাণ মুছে দেওয়ার জন্য তাঁকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
প্রিয়াঙ্কার মায়ের দাবি, বিপদের আভাস পেয়ে প্রিয়াঙ্কার ছোট বোন তোন্ডাপাল্লি টোল প্লাজায় পৌঁছে খোঁজ করেছিলেন। না পেয়ে মা-বাবাকে জানালে তাঁরা থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। প্রিয়াঙ্কার মা বলেন, ‘আমার ছোট মেয়ে প্রথমে আরজিআইএ পুলিশ স্টেশনে গিয়েছিল। কিন্তু আরজিআইএ পুলিশ বলে, সেটি শামসাবাদ থানার ঘটনা।’ প্রিয়াঙ্কার বোনের অভিযোগ, এক থানা থেকে আরেক থানায় ঘোরাঘুরি করতেই দুই থেকে তিন ঘণ্টা চলে যায়। যখন তল্লাশি শুরু হয়, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। যদিও সাইবরাবাদের পুলিশ কমিশনার সজ্জানারের দাবি, আরজিআইএতে অভিযোগ জানাতেই দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
এদিকে এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিবাদের ঝড় তোলে লাখো মানুষ। এ ছাড়াও অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে ভারতজুড়ে রাজপথে নেমে আসে অসংখ্য মানুষ।