ভারতে বায়ুদূষণের কবলে ‘দেবী দুর্গা ও কালী’

বায়ুদূষণের শিকার ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল। রাজধানী দিল্লির অবস্থা আরো শোচনীয়। দিল্লিতে দিওয়ালীর পর থেকে বাতাসের দূষণের মাত্রা ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছানোর জেরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শহরটিতে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি (পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি) অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
দিল্লির রাস্তায় প্রায় সবাই বায়ুদূষণের কারণে মাস্ক পরে বের হন। এবার ‘বায়ুদূষণের শিকার হয়েছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রতিমা’।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, সারা দেশ দূষণ নিয়ে চিন্তিত। দিল্লি তো বটেই, বড় বড় সব শহরেই দূষণের কবল থেকে বাঁচতে মুখোশে মুখ ঢেকেছেন সাধারণ মানুষ। শুধুই কি মানুষ? মুখ ঢেকে দেওয়া হয়েছে দেবতাদেরও!
প্রধানমন্ত্রী মোদির সংসদীয় এলাকা বারানসীও ভয়ঙ্কর দূষণের সম্মুখীন। আর দেবতাদের শহর বারানসীতেই স্বয়ং হিন্দুদের ভগবানকেও দূষণ থেকে বাঁচাতে পরানো হয়েছে মুখোশ। দূষিত বায়ু থেকে আরাধ্য ঈশ্বরকে রক্ষা করতে মূর্তিগুলিকে মুখোশ পরিয়ে রেখেছেন কাশীর লোকজন।
বারানসীতে অবস্থিত কাশী বিদ্যাপীঠ বিদ্যালয়ের নিকটে অবস্থিত শিব-পার্বতীর মন্দিরে অবস্থিত প্রতিমার মূর্তিগুলিকে পুরোহিত ও ভক্তেরা মিলে মুখোশ পরিয়ে দিয়েছেন। পুরোহিত হরিশ মিশ্র্র বলেন, ‘বারাণসী আস্থার নাগরী। আমরা দেবতাদের এখানে মানুষের মতো করেই ভাবি। যখন খুব গরম পড়ে তখন দেবতাদের শরীর ঠাণ্ডা রাখার জন্য তাঁদের শরীরে চন্দন লেপে দেওয়া হয়। শীতকালে দেবতাদের সোয়াটারও পরানো হয়। তাই যখন মানুষের মতোই দেখি তাহলে নিশ্চয়ই তাঁদের এই দূষণে খুবই কষ্ট হচ্ছে। তাই আমরা প্রতিমাদের মুখ মুখোশে ঢেকে দিয়েছি।’
তিনি বলেন, ভোলানাথ, দেবী দুর্গা, কালী ও সাঁই বাবার পূজা করার পর তাদের মুখোশ পরানো হয়েছে। প্রতিমাদের মুখোশ পরতে দেখে দূষণ থেকে বাঁচতে লোকজন নিজেরাও মুখোশ পরতে শুরু করেন। ছোট বাচ্চাদেরও দূষণ থেকে বাঁচাতে মুখ ঢেকে রাখা হচ্ছে।
হরিশ মিশ্র বলেন, তিনি বেশ অনেকটা সময় জুড়েই প্রতিমাগুলোকে মুখোশ পরিয়ে রেখেছিলেন। কালীর মূর্তিতে মুখোশ পরানো হলে তাঁর জিভও ঢাকা পড়ে যায়। শাস্ত্রে নাকি বলা আছে, কালীর জিভ ঢাকা যাবে না, তাই পরে অবশ্য তাঁর মুখোশ খুলে ফেলা হয়।
দীপাবলিতে লোকজন এই অঞ্চলে এত পরিমাণে আতসবাজি জ্বালিয়েছে যে, পরেরদিন থেকেই গঙ্গার ঘাটে ঘাটে ধোঁয়ায় ভর্তি হয়েছিল। ধোঁয়ায় চোখ জ্বলা থেকে শুরু করে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যাও দেখা দিয়েছে। গাছ পালা কেটে ফেলার ফলে এখানে অক্সিজেনেরও অভাব রয়েছে।