মেয়ের কফিনের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়া বাবাকে পুলিশ মারল লাথি!

মেয়ের কফিনের সামনে আকুল কান্নায় ভেঙে পড়েছেন বাবা। সন্তানের অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না তিনি। এমন পরিস্থিতিতেই শোকার্ত ওই বাবার পিঠে লাথি মারল পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
ভারতীয় গণমাধ্যমসূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থল ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য তেলাঙ্গানার সাঙ্গারেড্ডি এলাকায়। সাম্প্রতিক ওই ঘটনার ভিডিও সামনে আসার পর থেকেই তীব্র বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে পড়েছে তেলেঙ্গানা পুলিশ। শাস্তির দাবি উঠেছে নেট দুনিয়ায়। জানা গেছে, চাপের মুখে শ্রীধর নামের অভিযুক্ত ওই পুলিশ কনস্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দি ওয়াল এ খবর জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, গত মঙ্গলবার তেলেঙ্গানার ভেলিমালা এলাকার একটি আবাসিক কলেজের শৌচাগার থেকে ১৬ বছরের এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মেয়েটি আত্মঘাতী হয়েছে। কিন্তু কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের মেয়েকে মেরে ফেলে আত্মহত্যার গল্প সাজিয়েছে।
ওই কিশোরীর মায়ের অভিযোগ, তিনি মেয়ের বান্ধবীদের কাছ থেকে জেনেছেন, তাঁর মেয়ের দুদিন ধরে খুব জ্বর ছিল। কিন্তু অসুস্থতা সত্ত্বেও কিশোরীর চিকিৎসা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিশোরীর বাড়িতে কোনো খবর দেওয়া হয়নি। এর পরই শৌচাগার থেকে কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। কিশোরীর মায়ের দাবি, অসুস্থ অবস্থায় তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। এর পেছনে কোনো ষড়যন্ত্র রয়েছে।
মেয়ের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যু মেনে নিতে পারেননি ওই কিশোরীর বাবা। তাই মেয়ের মরদেহ কফিনে করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে পথে এলিয়ে পড়েন তিনি। কান্নায় ভেঙে পড়েন রাস্তায়। অভিযোগ উঠেছে, সে সময় কিশোরীর বাবার পিঠে সজোরে লাথি মারে অভিযুক্ত কনস্টেবল শ্রীধর। শোকার্ত ওই বাবাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এরপর ওই কিশোরীর মা এগিয়ে এসে কোনোমতে পরিস্থিতি সামাল দেন।
এমন ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেটিজেনরা। তবে সাঙ্গারেড্ডি এলাকার পুলিশ সুপার চন্দন দীপ্তি পুলিশের পক্ষে সাফাই দিয়ে বলেন, ‘ঘটনাস্থলে সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ করছিল। পুলিশ তাদের কাজ করতে পারছিল না। বিক্ষুব্ধ জনতাকে সামাল দিতে গিয়েই এমন ঘটনা ঘটে গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’