‘যাদের মা-বাবার ঠিক নেই, তারাই সিএএ-এনআরসি ভয় পায়’
যাদের মা-বাবার ঠিক নেই, তাঁরাই নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে (সিএএ) ভয় পাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। পাশাপাশি তিনি হিন্দুদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘হিন্দুদের চিন্তার দরকার নেই। হিন্দুদের জন্য আমরা আছি।’ গতকাল শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ায় এক সভায় এ কথা বলেন দিলীপ ঘোষ।
এ সময় বিজেপির রাজ্য সভাপতি বলেন, ‘ভারতে যারা এনআরসি ও সিএএকে ভয় পাচ্ছেন, তাঁদের মা-বাবার ঠিক নেই। আমার মা-বাবার ঠিক আছে, আমি এক নম্বর। তাই আমি এনআরসিকে ভয় পাচ্ছি না। আর যাঁদের মা-বাবার ঠিক নেই, কোনো পরিচয় নেই, তাঁরাই এনআরসি ও সিএএকে ভয় পাচ্ছেন। কিন্তু মনে রাখবেন, এনআরসি ও নাগরিকত্ব আইন কার্যকর হবেই। কেউ আটকাতে পারবে না।’
ভারতে এনআরসি ও সিএএ নিয়ে বিরোধীরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে অভিযোগ করে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘ওরা ভয় দেখাচ্ছে। মা-বাবার জন্ম তারিখ লাগবে না। আমাদের মা-বাপ ঠিক আছে। আমাদের কোনো চিন্তা নেই। যাদের মা-বাপের ঠিক নেই, তাদের চিন্তা।’
এদিকে পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি ও সিএএ কার্যকর হতে দেবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তৃণমূল নেত্রী না চাইলেও বাংলায় এনআরসি হবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন দিলীপ। তিনি বলেন, ‘৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের বিরোধিতা করেছিলেন দিদিমণি। ৩৭০ চলে গেল। রামমন্দিরের বিরোধিতা করেছিলেন দিদিমণি। সেই রাম মন্দিরও হয়ে গেল। রাতের বেলায় গিয়ে পুজোও দিয়ে আসবেন। সব প্রায়শ্চিত্ত ওখানেই হবে। সিএএ পাস হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকার নির্দেশিকাও জারি করেছে। উনি বলেছিলেন, পাস হতে দেবেন না।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষকে উসকানি দিচ্ছেন দাবি করে দিলীপ বলেন, ‘সংখ্যালঘু (অধ্যুষিত) এলাকায় মানুষকে রাস্তায় নামিয়ে গাড়ি জ্বালিয়ে, ট্রেন জ্বালিয়ে দিয়েছিলেন। আজ সব শান্ত কেন? আমাদের দিদিমণি সবাইকে বোকা বানিয়েছেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যা বলেন, তা কার্যকর করেনই। কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করবেন বলেছিলেন, সেটা করেছেন। এবার নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করার কথা বলেছেন, সেটাও তিনি করবেন। শুধু আধার কার্ড, ভোটার কার্ড দিয়ে নাগরিকত্বের প্রমাণ দেওয়া যাবে না। নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে যথাযথ ফরম পূরণ করতে হবে। যারা বাংলাদেশ থেকে আসছেন, তাদের বাবা মায়ের নাম-ঠিকানা, জন্মতারিখ যথাযথভাবে পূরণ করতে হবে। তাই বলছি, নিয়ম মেনে ফরম পূরণ করুন। নিশ্চিন্তে ভারতের নাগরিকত্ব পান। কারো কথায় প্ররোচিত হয়ে ফরম পূরণ না করলে সমস্যায় পড়তে পারেন।’
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি সভাপতি আরো বলেন, ‘আমরা পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় এলে পুলিশ এখনকার মতো নপুংসক হয়ে থাকবে না। যারা এখন সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করছে, তাদের গুলি করে মারা হবে। এর আগেও আমি এই কথা বলেছি, আজও বললাম।’ তাঁর এই বক্তব্যে দলের হাইকমান্ডের অনুমোদন আছে কি না, জানতে চাওয়ায় দিলীপ বলেন, ‘আমার কোনো হাইকমান্ড নেই। আমিই আমার হাইকমান্ড।’
বুদ্ধিজীবীদের তীব্র সমালোচনা করে দিলীপ ঘোষ আরো বলেন, ‘বুদ্ধিজীবীরা পরজীবী। শুধুই শয়তানি করতে জানে। মানুষকে ভুল বোঝাতে জানে। মোদি এই রাজ্যে এলে তারা বিরোধিতা করে, রাস্তায় বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু দেশে অনুপ্রবেশকারীরা ঢুকলে কিংবা খাগড়াগড়ের মতো ঘটনা ঘটলে ওরা চুপ করে থাকে। তখন ওদের খুঁজে পাওয়া যায় না।’