স্কুলের ভেতরেই দুই শিক্ষকের চড়-ঘুসি-হাতাহাতি (ভিডিও)

নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী হয়ে থাকল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার ঐতিহ্যবাহী কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল। গণমাধ্যমের সামনেই মারপিটে জড়ান স্কুলের ভূগোলের শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষক।
আচমকাই চড়, এর পরেই শুরু হয়ে গেল হাতাহাতি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজন শিক্ষক। তাঁদের এ মারামারির ঘটনা গণমাধ্যমের ভিডিও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে স্কুল পুনরায় খোলার আগের দিন গতকাল বুধবার সকালে দুই শিক্ষকের এ হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে।
সংবাদমাধ্যম এবিপি লাইভ জানিয়েছে, কৃষ্ণনগরের ঘটনায় গতকালই তদন্তের নির্দেশ দেয় রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। পুরো ঘটনায় স্কুল শিক্ষা দপ্তর অবিলম্বে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন চেয়ে পাঠায়। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শককে আগামীকাল শুক্রবারের মধ্যে বিশদ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাজ্য সরকার পুরো ঘটনায় উদ্বিগ্ন বলে জানা গেছে।
সূত্রের খবর, ভূগোল বিষয়ের শিক্ষক নিমাই মজুমদার স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন বিশ্বাসের কাছে বেতনের স্টেটমেন্ট চেয়েছিলেন। প্রধান শিক্ষক তা দিতে রাজি হননি। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষের সামনে অবস্থানে বসেন নিমাই মজুমদার।
পে স্লিপ না পাওয়াসহ একাধিক অভিযোগে এদিন পোস্টার-প্ল্যাকার্ড নিয়ে নিমাই মজুমদার প্রধান শিক্ষকের কক্ষের সামনে হাজির হন। সে সময় সংবাদমাধ্যমের সামনে কথা বলছিলেন প্রধান শিক্ষক। তখনই তুমুল হাতাহাতি বেঁধে যায় দুই শিক্ষকের মধ্যে। ধাক্কাধাক্কি, কিল, চড়, ঘুসি—বাদ গেল না কিছুই। এরপর অন্য শিক্ষকেরা এসে দুজনকে সরিয়ে দেন।
প্রধান শিক্ষক মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘আমাকে উনি (নিমাই মজুমদার) মারতে এসেছিলেন। আমি প্রতিরোধ করেছি। আমি কাউকে মারিনি। উনার ক্লার্কের সঙ্গে কী গন্ডগোল হয়েছে আমি জানি না। ক্যামেরার সামনে আমার গায়ে হাত তোলা হয়েছে। পেছন থেকে এসে আমাকে মারা হয়েছে।’
অন্যদিকে, ভূগোল শিক্ষকের দাবি, ‘আমাকে জুতা মারতে চেয়েছে। আমাকে স্যালারি স্টেটমেন্ট দিতে হবে। আমি ২৫ বছর চাকরি করছি। প্রধান শিক্ষক কি একমাত্র উনি পশ্চিমবঙ্গে? উনি আমার সামাজিক জীবনটাকে নষ্ট করে দিচ্ছেন।’
১৭৫ বছরের পুরোনো কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুল। একসময় এ স্কুলে পড়েছিলেন রামতনু লাহিড়ি, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, হেমন্ত কুমার সরকারের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। সে ঐতিহ্যবাহী স্কুলে দুই শিক্ষকের মারপিট কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীরা থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনেরা।