কলকাতায় গিয়ে ডেঙ্গু, বাংলাদেশি নারীর মৃত্যু

বাংলাদেশ থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে গিয়ে লক্ষ্মী ঘোষ (৩৮) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে এ কারণেই তিনি মারা গেছেন কি-না তা নিশ্চিত নয়।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার বেলেঘাটার ইনফেকশাস ডিজিজ (আইডি) হাসপাতালে লক্ষ্মীর মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার নারায়ণগড়ের শ্যামনগর উপজেলায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লক্ষ্মী গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক বছরের ভিসা নিয়ে কলকাতায় যান। পরে কলকাতা সংলগ্ন বাগুইআটি এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। সেখানে গত কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন তিনি। পরে স্থানীয় এক চিকিৎসকের কাছে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই চিকিৎসকের পরামর্শে গত বুধবার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে লক্ষ্মীর রক্ত পরীক্ষা করানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার পাওয়া রক্ত পরীক্ষার প্রতিবেদনে লক্ষ্মীর শরীরে ডেঙ্গুর জীবাণু রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, লক্ষ্মীর রক্তে প্ল্যাটিলেট কাউন্ট এক লাখ ৩৫ হাজার। যা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম।
প্রতিবেদন দেখে লক্ষ্মীর আত্মীয়রা শঙ্কিত হয়ে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে ভর্তির জন্য নিয়ে যান। কিন্ত লক্ষ্মীর শারীরিক অবস্থা দেখে নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ তাঁকে ফিরিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেন তাঁর আত্মীয়রা।
এরপর লক্ষ্মীকে আরেকটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানেও ভর্তি করতে না পারায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে কলকাতার বেলেঘাটার ইনফেকশাস ডিজিজ (আইডি) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সকাল থেকেই লক্ষ্মীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। কমতে থাকে রক্তের প্ল্যাটিলেটের পরিমাণ। সন্ধ্যার পর তাঁর মৃত্যু হয়।
লক্ষ্মী ঘোষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে আইডি হাসপাতাল থেকে দেওয়া মৃত্যুসনদে ডেঙ্গুর কথা উল্লেখ করা হয়নি। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মাল্টিপল অর্গ্যান ফেলিওর’(একাধিক অঙ্গের কার্যকারিতা বন্ধ)।
এ বছর পশ্চিমবঙ্গে ডেঙ্গুর তীব্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিদিনই রাজ্যের কোথাও না কোথাও ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। রাজ্য সরকারের হিসাব মতে, পশ্চিমবঙ্গে এখনো পর্যন্ত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে বেসরকারি হিসাব মতে, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা শতাধিক ছাড়িয়েছে। আর আক্রান্তের সংখ্যা এই মুহূর্তে ২০ হাজারের বেশি।