ভারতে মেয়েকে আনতে গিয়ে জামাইয়ের হাতে শ্বশুর খুন!

ভারত থেকে মেয়ে ও নাতিকে বাংলাদেশে আনতে গিয়ে জামাইয়ের হাতে শ্বশুর খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জামাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত ৪ নভেম্বর উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার স্বরূপনগর থানা-লাগোয়া গাইঘাটা থানার বড়া কৃষ্ণনগর এলাকা থেকে ওই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম গোপাল বিশ্বাস (৪৫)। তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের বাগেরহাট জেলার তলমারি থানার কলসিরা এলাকায়।
পুলিশ জানায়, মেয়ে ও নাতিকে বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য কিছুদিন আগে গোপাল বিশ্বাস পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার স্বরূপনগর থানার তেপুর এলাকায় তাঁর জামাইয়ের বাড়িতে যান। কিন্তু শ্বশুরের সঙ্গে নিজে এবং স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে বাংলাদেশে আসতে রাজি ছিলেন না জামাই নীহার মণ্ডল। এ নিয়ে তাঁদের জামাই-শ্বশুরের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এর জেরেই গোপাল বিশ্বাস খুন হয়েছেন। গত ৪ নভেম্বর কৃষ্ণনগর এলাকায় রাস্তার পাশ থেকে গোপাল বিশ্বাসের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে নিহত গোপাল বিশ্বাসের জামাই নীহার মণ্ডল রয়েছেন। এরই মধ্যে নীহার মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশের ভাষ্য, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় বাইসাইকেলে করে নীহার মণ্ডল তাঁর শ্বশুর গোপাল বিশ্বাসকে নিয়ে গাইঘাটা থানা এলাকায় বাজারে যান। এর পর কৃষ্ণনগরের কাছে শ্বশুরের মাথায় প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন তিনি। পরে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে শ্বশুরকে খুন করেন নীহার। এর পর লাশ রাস্তার পাশে ফেলে রেখে যান তিনি। পরের দিন সকালে স্থানীয় লোকজন লাশ দেখতে পেয়ে গাইঘাটা থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লাশের পাশ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গোপাল বিশ্বাসের মোবাইলের কললিস্টে ‘ইমো’র সাহায্যে বাংলাদেশে তাঁর স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের কাছে থেকেই নীহার মণ্ডলের খোঁজ পায় পুলিশ। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা গেছে, নীহার মণ্ডলের বাড়িও বাংলাদেশে। বছর চারেক আগে গোপাল বিশ্বাসের মেয়েকে বিয়ে করেন তিনি। তারপর সপরিবারে ভারতে চলে যান।
গতকাল বুধবার জামাই নীহার মণ্ডলকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমা আদালত। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নীহার মণ্ডলকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জানার চেষ্টা করা হচ্ছে এ ঘটনায় কারা জড়িত।