কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি আর নেই

ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, জাতীয় কংগ্রেসের নেতা ও ক্রীড়াব্যক্তিত্ব প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি আর নেই। আজ সোমবার দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে নয়াদিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
প্রিয়রঞ্জনের ভাই অসীম দাশমুন্সি জানিয়েছেন, মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
একটানা নয় বছর ধরে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রিয়রঞ্জন। এক মাস ধরে তাঁর অবস্থা ছিল আশঙ্কাজনক। কয়েকদিন ধরে ফুসফুসের সংক্রমণের কারণে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি।
২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে দুর্গাপূজার পর কালিয়াগঞ্জের শ্রীকলোনির বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রিয়রঞ্জন। মস্তিষ্কে অতিমাত্রায় রক্তক্ষরণের ফলে তিনি কোমায় চলে যান। এরপর তাঁকে দিল্লির এইমস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কিছুদিন পর এইমস কর্তৃপক্ষ তাঁকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। যদিও কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে তাঁকে দিল্লির অ্যাপোলো হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেই থেকে দীর্ঘ নয় বছর প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির ঠিকানা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালের ২৬০৫-বি নম্বর কেবিন।
মৃত্যুর সময়ে তাঁর পাশে ছিলেন স্ত্রী দীপা দাশমুন্সি এবং ছেলে মিছিল।
১৯৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতা থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। ১৯৮৪ সালে হাওড়া থেকে পুনর্নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। পরের বছর প্রথমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর দায়িত্ব পান পশ্চিমবঙ্গের এই কংগ্রেস নেতা। ১৯৯৯ এবং ২০০৪ সালে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি। রাজনীতির পাশাপাশি ২০ বছর ধরে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির পদেও ছিলেন তিনি।
প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভাপতি সোনিয়া গান্ধী, কংগ্রেসের সহসভাপতি রাহুল গান্ধী, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নরেন্দ্র মোদি সমবেদনা জানিয়েছেন প্রয়াত নেতা প্রিয়রঞ্জনের স্ত্রীকেও। তাঁকে গভীর রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন রাজনৈতিক নেতা বলে উল্লেখ করে ভারতীয় ফুটবলে তাঁর ভূমিকার কথাও বলেছেন তিনি।
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির প্রয়াণে গভীর শোক ব্যক্ত করে কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘প্রিয়রঞ্জনের মৃত্যু দলের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি।’ শোকবার্তায় সোনিয়া বলেছেন, ‘প্রিয়রঞ্জন ছিলেন নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক কর্মী। পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম শীর্ষ নেতা। অত্যন্ত সুখ্যাতির সঙ্গে তিনি দল ও সরকারের সেবা করেছেন। তাঁর কর্মকাণ্ড ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রেরণা হয়ে থাকবে। দীর্ঘ অসুস্থতা সত্ত্বেও মানুষের কাছে প্রিয়রঞ্জন জনপ্রিয় ছিলেন।’ প্রয়াত নেতার পরিবার, বিশেষ করে স্ত্রী কংগ্রেস নেত্রী দীপা দাশমুন্সি ও সমর্থকদের সহমর্মিতাও জানিয়েছেন সোনিয়া গান্ধী।
প্রিয়রঞ্জনের মরদেহ দিল্লির আকবর রোডে কংগ্রেসের সদর দপ্তরে নিয়ে আসা হবে। সেখানে দলের সহসভাপতি রাহুল গান্ধীসহ শীর্ষ নেতারা প্রিয়রঞ্জনকে অন্তিম শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন।