আনসারুল্লাহ সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি ভারতীয় পুলিশের

বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) এক সদস্যকে গ্রেপ্তারের দাবি করেছে ভারতের কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্স (এসটিএফ)।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার ভারত-নেপাল সীমান্তের কাছ থেকে ওই সন্দেহভাজন ‘জঙ্গি’কে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত ওই ব্যক্তির নাম ওমর ফারুখ ওরফে মো. আফতাভ খান। আজ বুধবার তাঁকে কলকাতার ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হবে।
এসটিএফ দাবি করেছে, ওমর ফারুখ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের এক্সপ্লোসিভ উইংয়ের (বিস্ফোরক বিভাগ) সক্রিয় সদস্য। বিস্ফোরক তৈরি এবং ব্যবহারে তিনি খুবই দক্ষ। ওমর এরই মধ্যে অনেককে বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। তাঁর কাছ থেকে বিস্ফোরক তৈরির বই, ম্যাপ ও নকল আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে।
গত ২১ নভেম্বর কলকাতা রেলস্টেশন থেকে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করেন এসটিএফ সদস্যরা। তাঁরা হলেন সামসাদ মিয়া ওরফে তানভীর, সাইফুল ওরফে তুষার ও মনতোষ দে ওরফে জিয়ারুল গাজী। তানভীর ও সাইফুলকে বাংলাদেশি এবং মনতোষকে ভারতীয় বলে পরিচয় দিয়েছিল পুলিশ।
ওই তিন সন্দেহভাজন ‘জঙ্গি’কে জিজ্ঞাসাবাদ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ নভেম্বর কলকাতা শিয়ালদহের জগৎ সিনেমা হলের সামনে থেকে শাহাদাত হোসেন নামের আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আরো এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করারও তথ্য দেয় পুলিশ।
পরে গ্রেপ্তার চারজনকে আবার জিজ্ঞাসাবাদ করে এসটিএফ। সে সময় তাঁদের জবানবন্দির ভিত্তিতে খোঁজ মেলে আরো তিনজনের। তাঁরা হলেন স্বপন বিশ্বাস ওরফে তামিম, নয়ন গাজী ও ওমর ফারুখ ওরফে আফতাভ খান। এর পরই ওই তিনজনের খোঁজে নামে এসটিএফ।
অনুসন্ধানে এসটিএফ জানতে পারে, গত ৮ থেকে ১১ অক্টোবর ওই তিনজন হাওড়ার একটি হোটেলে অবস্থান করেছিলেন। এ সময় হোটেলের রেজিস্টার ঘেঁটে একটি আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়। সেটিতে আফতাভ খানের নাম লেখা ছিল। এই আফতাভ খানই গ্রেপ্তার হওয়া ওমর ফারুখ বলেও দাবি করে পুলিশ।
এসটিএফ আরো জানায়, সম্প্রতি ওই তিন ব্যক্তি হাওড়া এলাকায় ভাড়া বাড়ির খোঁজ করছিলেন। তাঁরা যে হোটেলে উঠেছিলেন, সেখানের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে তিনজনের ছবিও পাওয়া যায়। পরে সেই ছবি দেখে তল্লাশি শুরু হয়।
এদিকে কলকাতা পুলিশের তরফ থেকে এই তিনজনের সন্ধানে পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। পুলিশ গোপন সূত্রে খবর পায়, তিন ‘জঙ্গি’ নেপাল সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছে। সেই অনুযায়ী, গতকাল মঙ্গলবার নেপাল সীমান্ত থেকে ওমর ফারুখকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জিজ্ঞাসাবাদে ওমর ফারুখের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে এসটিএফ আরো দাবি করে, ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপককে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন ওমর ফারুখ। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় তাঁর পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। সে সময় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওমরের দুই সহযোগী নিহত হন। এরপরই বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে পশ্চিমবঙ্গে যান ওমর।
এদিকে ওমরকে গ্রেপ্তারের পর আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য তামিম ও নয়ন গাজীকে খোঁজা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে এসটিএফ।