রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর কারণ জানালেন বিএসএফের ডিজি

ভারতের বিভিন্ন জায়গায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের যোগসূত্র একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের (বিএসএফ) মহাপরিচালক কে কে শর্মা। আগামী ১ ডিসেম্বর বিএসএফের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী দিবসের প্রস্তুতি অনুষ্ঠানে আজ বুধবার এই কথা বলেন তিনি। ভারতের দিল্লিতে এই অনুষ্ঠান হয়।
কে কে শর্মা বলেন, চলতি বছরের শুরু থেকে গত ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ৮৭ জন রোহিঙ্গা ধরা পড়েছে। যার মধ্যে ৭৬ জনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
বিএসএফের ডিজি বলেন, আমাদের কাছে যা তথ্য আছে সেই অনুসারে প্রায় ৩৬ হাজার রোহিঙ্গা ভারতের নানা স্থানে বসবাস করছে। তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের যোগসাজশের বিষয়টি যেমন উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তেমনি এটাও ঠিক যে, সীমান্ত পাহারায় থাকা বাহিনী এমন কোনো নির্দিষ্ট ঘটনার মুখোমুখি হয়নি যেখানে কোনো রোহিঙ্গা অস্ত্রশস্ত্রসহ ধরা পড়েছে বা সন্ত্রাসবাদীর সঙ্গে যোগসূত্র বেরিয়ে এসেছে। তবে তাদের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদীদের যোগসাজশ থাকার আশঙ্কা মারাত্মক ব্যাপার, যেটা সন্দেহ করছেন আমাদের সহযোগী সংস্থা পুলিশ ও গোয়েন্দারা।
কে কে শর্মা বলেন, বিএসএফ বাহিনী বাংলাদেশ থেকে ভারতে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ রুখতে দুই দেশের সীমান্তে বিপজ্জনক ফাঁড়িগুলোতে নজরদারির জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি বসিয়েছে, লোক-লস্করও বাড়িয়েছে। ভারতে অনুপ্রবেশ করার সময় ধরা পড়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তাদের গ্রেপ্তার করা হলে তারা বোঝা হয়ে উঠতে পারে, তাই সে পথে হাঁটেনি বাহিনী।
বিএসএফের ডিজি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যাটি অত্যন্ত জটিল। আমাদের কাছে থাকা সর্বশেষ হিসাব অনুসারে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে ঢুকেছে ৯ থেকে ১০ লাখ রোহিঙ্গা। তাদের একটা অংশ ভারতে চলে আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। রোহিঙ্গা বা বাংলাদেশি যেই হোক না কেন, কোনো অনুপ্রবেশকারীকেই ভারতে ঢুকতে দেওয়া হবে না। বিএসএফের পক্ষে সীমান্তে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গাদের আলাদা করে চেনার উপায় নেই, তাই কেউ এপারে ঢোকার চেষ্টা করলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফেরত পাঠিয়ে দেই।’
বিএসএফের পেশ করা এক সরকারি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন এজেন্ট রোহিঙ্গাদের ভারতে কাজের লোভ দেখিয়ে তাদের বোঝায়। ভারতের জম্মু-কাশ্মীর, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গের মতো ভারতের কিছু রাজ্যে নিজেদের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে মিশে তারা থাকতে পারবে। এ ছাড়া বেশির ভাগ রোহিঙ্গাই ভারতের জম্মুতে চলে যায়। কারণ সেখানে বেশ কয়েক বছর ধরেই পাকাপাকিভাবে আস্তানা গেঁড়ে রয়েছে বহু রোহিঙ্গা।