আসিফা ধর্ষণ ও হত্যার বিচার চাইলেন রাহুল গান্ধী

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের কাথুয়ায় আট বছর বয়সী আসিফা বানুর ধর্ষণ ও হত্যাকারীর শাস্তির দাবিতে মধ্যরাতের পদযাত্রায় নেমেছেন কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধী।
গতকাল বৃহস্পতিবার মাঝরাতে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির প্রাণকেন্দ্র ইন্ডিয়া গেটে এই পদযাত্রা হয়। এই আন্দোলনে যোগ দেন সোনিয়া গান্ধীসহ তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা ভদ্র গান্ধী।
আন্দোলনটি বিজেপির সঙ্গে সঙ্গে ভারত-পাকিস্তান দুই দেশের বিরোধকেই সামনে নিয়ে আসে।
পাঁচ বছর আগে নির্ভয়া নামে একটি মেয়েকে গণধর্ষণের প্রতিবাদে ভারতে প্রবল আন্দোলন গড়ে উঠেছিল। সেই আন্দোলনে মুখে ধর্ষণের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন করতে বাধ্য হয়েছিল ভারতীয় সংসদ। কাল রাতের এই আন্দোলন সেই গণঅভ্যুত্থানকেই মনে করিয়ে দেয়।
রাহুল গান্ধী সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেখানেই তাকাই দেখি, নারী ও শিশুরা ধর্ষিত হচ্ছে, খুন হচ্ছে। আমরা চাই, এই সরকার যেন এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়। এটা কোনো রাজনৈতিক বিষয় নয়, এটা জাতীয় সমস্যা।’
আন্দোলনটির স্লোগান ছিল ‘বেটি বাঁচাও’। অর্থাৎ কন্যাশিশুদের বাঁচাও। এই স্লোগানটিকেও স্বাগত জানান রাহুল গান্ধী।
নারী ও শিশুদের প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে রাহুল গান্ধীর শান্তিপূর্ণ, নীরব আন্দোলনের ডাকে শত শত মানুষ, বিশেষ করে কংগ্রেস নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
রাহুল গান্ধী বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘এ ধরনের অপরাধীকে কীভাবে কেউ আশ্রয় দিতে পারে। আসিফার সঙ্গে যা ঘটে গেল, তা মানবতাবিরোধী। এটা শাস্তির বাইরে থাকতে পারে না।’
এ ঘটনার প্রতিবাদে ভারতের বিশিষ্টজন প্রতিবাদ জানান। অভিনেতা ও পরিচালক ফারহান আখতার এক টুইটে বলেন, ‘ভাবুন, একটা আট বছর বয়সী মেয়ের মনের মধ্য দিয়ে কী যাচ্ছিল, যখন তাকে মাদক সেবন করা হয়, বন্দি করে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে মেরে ফেলা হয়। আপনি যদি অনুভব করতে না পারেন, আপনি মানুষ না। আপনি যদি আসিফার জন্য বিচার না চান, আপনি আর কিছুই চাইতে পারেন না।’
এদিকে, এটা একটা অরাজনৈতিক আন্দোলন হলেও মোদি সরকারকে তাদের দায়িত্ব মনে করিয়ে দিতে ভোলেননি কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা গোলাম নবি আজাদ। তিনি বলেন, ‘যখন সরকার ঘুমায়, দেশের প্রহরী ঘুমায়, তাকে জাগিয়ে তোলার দায়িত্ব কংগ্রেসের।’
২০১৪ সালে নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজেকে দেশের চৌকিদার বলে দাবি করেছিলেন। তারই জবাবে, গোলাম নবি আজাদ এই কথা বলেন।
গত ১০ জানুয়ারি বছর বয়সী আসিফা বানুকে অপহরণ করা হয়। এরপর দিনের পর দিন তাকে গণধর্ষণ করা হয়। পুলিশের দেওয়া তথ্য থেকে জানা যায়, শ্বাসরোধ করে হত্যার আগে তাকে আরেকবার ধর্ষণ করতে চেয়েছিল এক ধর্ষক। এই পুরোটা সময় আসিফাকে না খাইয়ে রাখা হয়েছিল বলেও জানায় পুলিশ।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু এদের বাঁচাতে আবার চেষ্টা করছেন হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি গোষ্ঠী। কেননা, যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরা হিন্দু, আর আসিফা বানুর পরিবার মুসলিম।