মরা পশুপাখির মাংস যায় কলকাতার রেস্তোরাঁয়!

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার একটি হিমঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ২০ টন মাংস। পুলিশ জানিয়েছে, এগুলো ভাগাড়ে ফেলা দেওয়া মরা পশুপাখির মাংস। এগুলো কলকাতার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করা হত!
আজ বৃহস্পতিবার এক অভিযান চালিয়ে এক হাজার প্যাকেট মাংস উদ্ধার করে পুলিশ।
কলকাতার নারকেলডাঙা এলাকার একটি হিমঘর থেকে ওই ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া মরা পশুপাখির মাংস উদ্ধার করা হয়। কলকাতা পুলিশ এবং ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে কলকাতার রাজাবাজার, ট্যাংরা এবং কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা জেলার জগদ্দল ও কাকিনাড়া এলাকা থেকে ছয় জনকে আটক করে।
জানা যায়, আটক ব্যক্তিরা ভাগাড় থেকে মাংস এনে তা হিমঘরে রেখে পরে কলকাতার বিভিন্ন নামি দামি রেস্তোরাঁয় নিয়মিতভাবে সরবরাহ করতো। কলকাতা ও কলকাতার আশেপাশের জেলার বিভিন্ন ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া পশুপাখির মাংস এনে তা সংরক্ষণ করে পরে ভালো মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে সরবরাহ করতো ওই চক্র।
ডায়মন্ড হারবার জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও জানান, বিভিন্ন ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া মরা পশুপাখির মাংস এনে তা প্রথমে হিমঘরে মজুদ করে রাখা হতো। পরবর্তীতে ভালো মাংসের সঙ্গে মিশিয়ে ওই সমস্ত মৃত পশুপাখির মাংস কলকাতার নামি দামি রেস্তোরাঁয় সরবরাহ করা হতো। এরইমধ্যে উদ্ধার হওয়া মরা পশুপাখির মাংস ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল কলকাতার পাশ্ববর্তী দক্ষিন ২৪ পরগনা জেলার বজবজ পৌরসভা এলাকায় পৌরসভার দুইজন অস্থায়ী কর্মী রাজা মল্লিক ও সানিকে মরা পশু নিয়ে যেতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এরপরই স্থানীয় মানুষজন তাঁদের আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের চাপের মুখে ওই সময় রাজা মল্লিক ও সানি জানান, মরা পশুপাখি পড়তে দেখলেই তাঁরা তা তুলে নিয়ে যান। তাঁরা স্বীকার করে, মরা পশুর মাংস নিয়ে তা কেটে পরিস্কার করে কলকাতার একাধিক নামি দামি হোটেলে সরবরাহ করা হয়। বিষয়টি জানার পরেই স্থানীয় লোকজন তাঁদেরকে ডায়মন্ড হারবার থানার পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
পুলিশ ঘটনার তদন্তে নেমে বড়সড় চক্রের সন্ধান পায়। আটক ব্যক্তিরা স্বীকার করেন ভাগাড়ে ফেলে দেওয়া মরা গরু, ছাগল, কুকুর, ভেড়া মুরগি ও পাখির মাংসও কেটে বিক্রি করে দিতেন তাঁরা। এরপর সেই মাংস কলকাতার নারকেলডাঙ্গার কাছে একটি গুদামে সংরক্ষণ করা হত। পরে সেই মাংস বের করে টাটকা মাংসের সঙ্গে প্যাকেটজাত করে চালান করে দেওয়া হত কলকাতার নামি দামি রেস্তোরাঁয়।