কর্নাটকে আজ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ভোটাভুটি

ভারতের কর্নাটক রাজ্যে স্থায়ী সরকার কে গঠন করবে তার অগ্নিপরীক্ষা আজ শনিবার বিকেল ৪টায়।
কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া বিজেপির ইয়েদুরাপ্পাকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য রাজ্যপাল বাজুভাই ১৫ দিনের সময়সীমা দিলেও শুক্রবার ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেন আস্থা ভোটে ইয়েদুরাপ্পাকে তার সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে। ফলে এখন টানটান উত্তেজনার প্রহর কাটছে কর্নাটকে।
বিজেপি এবং কংগ্রেস ও জেডিএস দুই শিবিরই দাবি করছে, সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাদের হাতে রয়েছে। যার অগ্নিপরীক্ষা হবে বিকেলে।
কর্নাটকে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়া বিজেপির ইয়েদুরাপ্পা বলেছেন, তিনি ১০০ শতাংশ নিশ্চিত সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে পারবেন। কর্নাটকে ২২৪টি আসনের মধ্যে ভোট হয়েছে ২২২টি কেন্দ্রে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে চাই ১১১টি আসন। বিজেপি একাই পেয়েছে ১০৪টি আসন। অন্যদিকে কংগ্রেস পেয়েছে ৭৮টি আসন এবং জেডিপি পেয়েছে ৩৭টি আসন। অন্যরা ৩টি আসন। এক্ষেত্রে কংগ্রেস ও জেডিপি জোটবদ্ধ হওয়ার ফলে তাদের আসন সংখ্যা পৌঁছেছে ১১৫টিতে। যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট।
তবে জেডিএস নেতা কুমারস্বামী দুটি আসনে জেতার ফলে সংখ্যগরিষ্ঠতা প্রমাণের ক্ষেত্রে ভোট হবে ২২১টি আসনের। সেক্ষেত্রে দুই তরফে যদি ১১০টি করে ভোট পড়ে তাহলে প্রোটেম স্পিকার ভোট দেবেন। প্রোটেম স্পিকার হলেন চারবারের বিধায়ক কে জি বোপাইয়া।
তবে কংগ্রেস-জেডিপি জোটের হাতে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিধায়ক সংখ্যা থাকলেও বিজেপির হাতে সেটা নেই। বিজেপির আসন সংখ্যা ১০৪টি। সাদা চোখে ৭ আসনের ঘাটতি রয়েছে তাদের।
এদিকে, কর্নাটকে আর শঙ্কর ও এইচ নাগেশ নামে কেপিজেপি এবং নির্দলের এক বিধায়ক কখনো বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন তো কখনো কংগ্রেস-জেডিপি জোটের দিকে ঝুঁকছেন। শেষ মুহূর্তে এই দুজনকে বগলদাবা করতে পারলে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা দাঁড়াবে ১০৬টিতে। তারপরও সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণে চাই আরো পাঁচজনের ভোট। তাই যেভাবেই হোক বিরোধী শিবির থেকে বিধায়ক পক্ষে ভেড়াতে না পারলে বিজেপির সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করা কার্যত অসম্ভব।
এরই মধ্যে কংগ্রেস থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে, মোটা অঙ্কের অর্থ এবং মন্ত্রিত্বের লোভ দেখিয়ে তাদের নির্বাচিত বিধায়কদের ভাঙানোর খেলা চালাচ্ছে বিজেপি। এমনকি আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এবং আয়কর বিভাগকে কাজে লাগিয়ে বিরোধী বিধায়কদের দলে টানার চেষ্টা করছে বিজেপি।
কংগ্রেসের সিদ্ধারামাইয়া এবং গুলাম নবি আজাদ অভিযোগ করে বলেছেন, বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ নির্লজ্জভাবে অর্থ এবং ক্ষমতার খেলা শুরু করেছেন। দিল্লিতে আটকে রাখা হয়েছে কংগ্রেসের আনন্দ সিং নামের এক নির্বাচিত বিধায়ককে।
কংগ্রেসের সন্দেহ, বিজেপি কংগ্রেস এবং জেডিএসের বেশ কয়েজজন বিধায়ককে নানাভাবে বা আইনি মারপ্যাঁচে আটকে রেখে ভোটাভুটির সময় তাঁদের অনুপস্থিত করে দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের ক্ষেত্রে হিসাবের অঙ্কটা কমিয়ে আনতে পারে। ফলে বিজেপির চোরা শিকার থেকে কংগ্রেস ও জেডিএস তাদের বিধায়কদের সুরক্ষিত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এরই আগে কংগ্রেস ও জেডিএসের বিধায়কদের বেঙ্গালুরুর কাছে ইগলটন গলফ রিসোর্টে এবং সাংরি-লা হোটেলে তোলা হয়। কিন্তু কর্নাটক নিরাপদ নয় বুঝে গতকাল রাতে তাঁদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় হায়দরাবাদে। আজ তাদের বিশেষ নিরাপত্তায় সেখান থেকে নিয়ে আসা হবে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভোটাভুটির সময়।