তামিলনাড়ুতে প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের গুলি, নিহত ৯

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে ৯ জন নিহত হয়েছেন। আহতের সংখ্যা ২০ জনেরও বেশি। তামিলনাড়ুর বন্দর শহর টুইটিকোরিন এলাকায় আজ মঙ্গলবার ওই ঘটনা ঘটে।
একটি তামার কারখানা বন্ধের দাবিতে স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিবাদ মিছিলে বাধা দেয় পুলিশ। এরপরেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতির এক পর্যায়ে মিছিলে গুলি চালায় পুলিশ। এই ঘটনায় টুইটিকোরিন এলাকায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই তামার কারখানা চালু হলে বাতাসে দূষনের মাত্রা ছড়িয়ে পড়ে। যে দূষন থেকে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। তাই এই তামার কারখানাটি বন্ধ করার দাবিতে গত তিনমাস ধরে স্থানীয় মানুষজন প্রতিবাদ জানাচ্ছে। চিঠি দেওয়া হয় তামিলনাড়ুর এআইএডিএম সরকারকেও। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্ত দীর্ঘদিন পরেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় মঙ্গলবার প্রতিবাদে পথে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তবে তামিলনাড়ু পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা ছিল। তা সত্ত্বেও প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিবাদী মানুষ এদিন মিছিল করে কারখানার দিকে এগিয়ে আসছিলেন। প্রথমে তাদের বাধা দেওয়া হয়। কিন্ত প্রতিবাদীরা সেই বাধা না মেনে উল্টো পাথর ছুঁড়তে শুরু করেন। এমনকি সরকারি গাড়িতে ভাঙচুর ও সরকারি সম্পত্তিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। উত্তেজিত জনতাকে সামাল দিতে পুলিশ প্রথমে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ শেল ফাটায়। পুলিশের দাবি, গুলিতে নয়, যাদের মৃত্যু ঘটেছে তারা প্রত্যেকেই পদপিষ্ঠ হয়েই মারা গেছেন।
তবে বিষয়টি নিয়ে তামিলনাড়ু রাজ্য সরকারের তরফে মন্ত্রী ডি জয়কুমার জানান, যারা গুলিতে নিহত এবং আহত হয়েছে তাঁদের ক্ষতিপূরন দেওয়া হবে। তিনি জানান, এদিন পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছিল তাতে পুলিশের কিছু করার ছিল না। ওই প্রতিবাদী মিছিলে সাধারন মানুষ যেভাবে হিংসাত্মক হয়ে উঠে তাতে পুলিশ গুলি চালাতে বাধ্য হয়।
এই ঘটনায় তামিলানাড়ুর বিরোধী দল ডিএমকের নেতা স্ট্যালিন জানান, প্রশাসন যথেষ্ট উদ্যোগী না হওয়ায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। অবিলম্বে ওই তামার কারখানা বন্ধ করে দেওয়া উচিত বলেও জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় অভিনেতা তথা রাজনীতিবিদ কমল হাসান বলেন, ‘নাগরিকরা তো অপরাধী নন, যে তাদের প্রাণ কেড়ে নিতে হবে। এটা সরকারের গাফিলতি।’