ট্রেন ধরতে বোমার নাটক

স্টেশনে যাচ্ছিলেন এক দম্পতি। পথে হঠাৎ করেই স্ত্রীর পেটে ব্যথা শুরু হয়। এরপর ওষুধ কিনতে গিয়ে দেরি করে ফেলে এই দম্পতি। ঠিক সময়ে ট্রেন ধরতে পারবেন না বুঝে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ফোন দেন স্বামী। বলেন, ট্রেনে বোমা আছে। এরপর ওই ট্রেনে ৯০ মিনিট তল্লাশি চালানো হয়। এরই মধ্যে পুলিশ এই দম্পতিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। যদিও পরে মামলা দিয়ে ছেড়েও দেয় পুলিশ।
গত শনিবার বিকেলে ভারতের নিউ দিল্লি স্টেশন এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ মাধ্যম এএনআই এই খবর জানিয়েছে।
জানা গেছে, কলকাতার বেহালার বাসিন্দা সুপ্রিয় মুখোপাধ্যায় তাঁর স্ত্রীকে আনতে গিয়েছিলেন দিল্লিতে। সুপ্রিয় একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত আছেন। তাঁর স্ত্রী দিল্লির পানিপথ এলাকায় থাকেন। শনিবার নিউ দিল্লি স্টেশন থেকে বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে হাওড়া-রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন ধরার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু স্টেশনে পৌঁছানোর আগে পেটে ব্যথা শুরু হয় সুপ্রিয়র স্ত্রীর। এরপর সুপ্রিয় অটোচালককে নিয়ে দিল্লির কনট প্লেসে যান স্ত্রীর জন্য ওষুধ কিনতে।
কিন্তু ওষুধ কেনার পর ভাবেন, স্টেশনে গেলে আর ট্রেনটি ধরতে পারবেন না তাঁরা। তখনই সুপ্রিয় মোবাইল থেকে ১০০ নম্বরে ডায়াল করে পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ফোন করেন। ফোন করে তিনি বলেন, দিল্লি থেকে হাওড়াগামী এক্সপ্রেসে বোমা রাখা আছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটে দিল্লি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে ফোন যায়। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বিষয়টি রেল পুলিশকে জানায়। এই খবর জানার পরেই রেল কর্তৃপক্ষ দিল্লির গাজিয়াবাদ স্টেশনে দিল্লি-হাওড়াগামী ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে দেয়। শুরু হয় ট্রেন জুড়ে তল্লাশি। সেই সঙ্গে পুলিশকে ফোন করে বোমার খবর কে জানালো তা নিয়েও খোঁজ-খবর শুরু হয়। দিল্লি পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে সুপ্রিয় যে মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করেছিলেন সেই নম্বরে ফোন করা হয়।
তখন সুপ্রিয় জানান, তিনি দিল্লির কনট প্লেসে রয়েছেন। এরপর সুপ্রিয়র মোবাইল ট্র্যাক করে সুপ্রিয় ও তাঁর স্ত্রীকে পাকড়াও করে দিল্লি পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জেরার মুখে সুপ্রিয় স্বীকার করেন, ট্রেন ধরার জন্য তিনি ট্রেনের মধ্যে বোমা আছে বলে খবর দিয়ে ফোন করেছিলেন। সুপ্রিয়র পরিকল্পনা ছিল, স্ত্রীকে নিয়ে অটোতে করে গাজিয়াবাদ স্টেশনে গিয়ে তিনি ট্রেন ধরবেন। সব শোনার পর বেশিক্ষণ তাঁদের আটকে রাখেনি পুলিশ। তাঁদের সতর্ক করে থানা থেকে জামিন দিয়েই ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে যে ট্রেন ধরার জন্য সুপ্রিয়র এই বুদ্ধি সেই ট্রেনটি ধরতে পারেননি তাঁরা।
ট্রেনটি তল্লাশির পর শনিবার রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে যখন হাওড়ার দিকে রওনা দেয় তখন সুপ্রিয় ও তাঁর স্ত্রী থানায় জামিন নিতেই ব্যস্ত ছিলেন।