লোকসভায় নরেন্দ্র মোদিকে জড়িয়ে ধরলেন রাহুল গান্ধী

ভারতের লোকসভায় ঘটল নজিরবিহীন ঘটনা। সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর যুক্তিতর্ক পেশ করেন কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধী। এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জড়িয়ে ধরলেন।
আজ শুক্রবার বিকেলে লোকসভা অধিবেশনে এ ঘটনা ঘটে।
সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি বলছে, রাহুল গান্ধী বলেন, ‘আপনাদের মনে আমার প্রতি ঘৃণা আছে। আপনি আমায় পাপ্পু বলতে পারেন, আরো অনেক গালাগাল করেও ডাকতে পারেন। কিন্তু আমার ভেতর আপনার সম্পর্কে কোনো ঘৃণা নেই।’ এসব বলার পরেই রাহুল গান্ধী সোজা গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জড়িয়ে ধরেন।
এরপর রাহুল গান্ধী চলে যাচ্ছিলেন। পেছন থেকে নরেন্দ্র মোদি তাঁকে ডাকলেন। রাহুল গান্ধীও কাছে গেলে দুজনে অল্প সময় কথা বলেন।
তবে এদিন বিতর্ক পর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একের পর এক ইস্যুতে কাঁঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাহুল অভিযোগ তোলেন। রাফাল যুদ্ধবিমানের ক্রয় চুক্তি নিয়ে এনডিএ সরকার দুর্নীতি করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রাহুল গান্ধী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কথার দাম থাকা উচিত। প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, প্রত্যেক ভারতবাসীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ রুপি দেবেন। কোথায় সেই রুপি?’ এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, দুই কোটি যুবকের কর্মসংস্থান হবে। চাকরি পেয়েছে মাত্র চার লাখ। ভারতে আজ বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ। প্রধানমন্ত্রী ভারতে জিএসটিকে অন্য রূপে এনে দেশকে বরবাদ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিজেকে দেশের চৌকিদার বলেছিলেন। এখন তিনি কোথায়? এখন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, দেশের ভাগীদার।’
রাফাল যুদ্ধবিমান ক্রয় নিয়ে রাহুল গান্ধী অভিযোগ করে বলেন, ‘রাফাল চুক্তি নিয়ে আমি ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। রাফাল চুক্তি কার সঙ্গে হয়েছে তার কিছুই জানে না ফ্রান্স। রাফালের দাম কতো? কেনো বলছে না মোদি সরকার, দুর্নীতি লুকাতে দাম বলা হচ্ছে না। ফ্রান্সের সঙ্গে কী চুক্তি হয়েছে জানান।’
রাহুল বলেন, চীনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দোলনায় দুলছেন। অথচ ডোকালাতে ভারতের সেনাবাহিনী চীনকে জবাব দিয়েছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় সেনাবাহিনীকে ঠকিয়েছেন।
রাহুল গান্ধী কৃষি ঋণ নিয়ে প্রশ্ন তোলে বলেন, প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় কৃষকদের ঋণ মওকুফ না করে শিল্পপতিদের আড়াই লাখ রুপি পর্যন্ত কর মওকুফ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হাসছেন, কিন্তু ভেতরে ভেতরে তিনি চিন্তিত। আমার চোখে চোখ রাখতে পারছেন না।
এদিন রাহুল গান্ধী যখন একের পর এক প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করেন, তখন বিজেপি সাংসদরা সভায় তুমুল হৈ-হট্টগোল করতে থাকেন। যার ফলে বারবার সভার কাজে হস্তক্ষেপ করতে হয় স্পিকার সুমিত্রা মহাজনকে।