পশ্চিমবঙ্গে ঘুরতে গিয়ে বাংলাদেশি ধর্ষণের শিকার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ঘুরতে এসে এক বাংলাদেশি নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসত শহরের একটি হোটেলে। বারাসত থানার পুলিশ ওই বাংলাদেশি নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে।
ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ রতন মজুমদার নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মূল অভিযুক্ত জগন্নাথ আচার্য পলাতক। পুলিশ তাঁর খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে।
বারাসত থানার পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ওই নারীর বাড়ি বাংলাদেশের গাজীপুর জেলায়। গত ২৩ জুলাই তিনি বাংলাদেশ থেকে বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। তিনি প্রথমে ভারত বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে বনগাঁ শহরের একটি হোটেলে ওঠেন। এরপর বারাসতের কাজীপাড়া এলাকায় তাঁর এক আত্মীয়র বাসায় যান। আত্মীয়র সঙ্গে দেখা করার পর গতকাল বুধবার তিনি কাজীপাড়া থেকে বারাসতে যাওয়ার জন্য একটি অটোতে ওঠেন। বারাসতে গিয়ে আবার বনগাঁ হোটেলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর।
জানা গেছে, ওই অটোতে বাংলাদেশি নারীর সঙ্গে আরো দুজন পুরুষ যাত্রী ছিলেন। তাদের নাম রতন মজুমদার ও জগন্নাথ আচার্য বলে পুলিশ জানিয়েছে। রতন মজুমদারের বাড়ি বারাসতের সুবর্ণপত্তনের শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় এবং জগন্নাথ আচার্যের বাড়ি বারাসতের রেল কলোনি এলাকায়। বারাসতে রতনের একটি দোকান রয়েছে।
বারাসত থানার পুলিশ আধিকারীক দীপংকর ভট্টাচার্য্য জানান, অটোতেই ওই বাংলাদেশি নারীর সঙ্গে আলাপ জমান রতন ও জগন্নাথ। বারাসতে অটো থেকে নেমে তাঁরা একটি ট্যাক্সি ভাড়া করে ওই নারীকে নিয়ে কলকাতা দেখানোর নামে কলকাতায় যান। গতকাল সারাদিন রতন ও জগন্নাথ ওই নারীকে নিয়ে কলকাতায় ঘুরে বেড়ান। ইস্ট বেঙ্গল মাঠ, মোহনবাগান মাঠ, ব্রিগেড ময়দানসহ কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় তাঁরা ওই নারীকে নিয়ে ট্যাক্সিতে করে ঘুরে বেড়ান।
পুলিশ ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে, ঘোরার সময় তাঁরা ওই নারীর সঙ্গে একাধিক ছবিও তোলেন। কলকাতায় সারাদিন ঘোরার পর তাঁরা একটি রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়াও সারেন।
এরপর রাতে কলকাতা থেকে ওই নারীকে নিয়ে তাঁরা চলে যান বারাসতে। পুলিশ জানিয়েছে, এরপর রতন ও জগন্নাথ বারাসতের টাকি রোড সংলগ্ন অজন্তা হোটেল নামের একটি হোটেলে ওঠেন। সেখানে রতন মজুমদারের নামে একটি ঘর ভাড়া নেওয়া হয়। সেই ঘরে তিনজনে মিলে ওঠেন। চলে গল্পগুজব। গল্পের মধ্যে তাঁরা দুইবার হোটেল থেকে কফিও এনে খান। এইভাবে কয়েক ঘণ্টা চলার পর রতন মজুমদার ওই নারীর জন্য মোবাইলের সিমকার্ড কেনার কথা বলে হোটেল থেকে বেরিয়ে যান বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সেই সময় হোটেলের রুমে ওই নারী ও জগন্নাথ আচার্য্য ছিলেন। সেই সুযোগে ওই নারীকে ধর্ষণ করে হোটেল থেকে পালিয়ে যান জগন্নাথ আচার্য্য। ওই ঘটনার পর রাতে আর হোটেলে ফিরে আসেননি রতন মজুমদারও।
বারাসত থানার পুলিশ আধিকারীক দীপংকর ভট্টাচার্য্য জানান, বৃহস্পতিবার ওই বাংলাদেশি নারী বারাসত থানায় এসে অভিযোগ জানান। নির্যাতিতা নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে ধর্ষণকাণ্ডে সহযোগী হিসেবে রতন মজুমদারকে গ্রেপ্তার করে বারাসত থানার পুলিশ। রতনকে জিজ্ঞাসা করে জগন্নাথ আচার্য্যের নাম ও ঠিকানা সংগ্রহ করেছে পুলিশ। জগন্নাথের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বারাসত থানার পুলিশ।