পঞ্চায়েত গঠন নিয়ে প্রাণ গেল আরো তিনজনের

পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত কমিটি গঠন নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিআই (এমের) মধ্যে সংঘর্ষে আরো তিনজন নিহত হয়েছেন। এর আগে গত শনিবার থেকে পঞ্চায়েত কমিটি গঠন ও তাতে প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে অব্যাহত সহিংসতায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় পাঁচজন নিহত হন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙ্গায় ওই সহিংসতার ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুজন ও সিপিএমের একজন নিহত হন।
জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যে থেকেই আমডাঙ্গা থানার তারাবেড়িয়া এলাকায় পঞ্চায়েতে কমিটি গঠন নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এলাকার বহিসগাছিতে তৃণমূল কংগ্রেস ও সিপিএমকর্মীদের ব্যাপক বোমাবাজি ও গোলাগুলিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা অঞ্চলে। এ সময় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। রাস্তা কেটে পুলিশকে এলাকায় ঢুকতেও বাধা দেওয়া হয়।
অব্যাহত বোমাবাজি ও গোলাগুলির মধ্যে পড়ে নিহত হন তৃণমূল কংগ্রেসের নাসির হালদার (৩৪), কুদ্দুস আলী গাইন (৩২) ও সিপিএমের মুজাফফর পিয়াদা। দুই পক্ষের প্রায় ২৮ জন আহত হন, তাঁদের মধ্যে সাতজনের আবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের চিকিৎসার জন্য বারাসত জেলা হাসপাতাল ও ব্যারাকপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সংঘর্ষ চলতে থাকলে অবশেষে কাটা রাস্তা পার হয়ে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স এলাকায় ঢুকে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। সে সময় এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে মোট ১০ জনকে গ্রেপ্তার ও প্রচুর পরিমাণে বোমা-বারুদ উদ্ধার করে পুলিশ।
আজ বুধবার সকাল থেকে এলাকার থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এলাকা আপাতত শান্তিপূর্ণ আছে।
এদিকে এ সহিংসতার ঘটনায় রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, বিরোধী পক্ষের লোকেরা বাংলাদেশ থেকে যাওয়া চোরাই অস্ত্র নিয়ে হামলা চালাচ্ছে শাসক দলের কর্মীদের ওপর। রাজনৈতিক স্বার্থে তারা এ খুনের রাজনীতি চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
আজ তারাবেড়িয়ায় পঞ্চায়েত কমিটি গঠন হওয়ার কথা। মোট ১৯ আসনের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস নয়টি, সিপিএম সাতটি এবং বিজেপি, কংগ্রেস ও নির্দল একটি করে আসন পায়।