উত্তরসূরি হিসেবে ‘শত্রু’র নামই বললেন ভারতের প্রধান বিচারপতি

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের পরবর্তী সময়ের প্রধান বিচারপতি হতে চলেছেন বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। বর্তমান প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের সুপারিশে সায় দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এরই মধ্যে নতুন প্রধান বিচারপতির নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেছেন তিনি।
আগামী ৩ অক্টোবর ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ৪৬তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেবেন রঞ্জন গগৈ। অবসরের সময়সীমার মধ্যে তিনি মোট ১৩ মাস ভারতের শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি থাকবেন। ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর তাঁর মেয়াদ শেষ হবে।
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের বর্তমান প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। সে ক্ষেত্রে পরবর্তী সময়ের প্রধান বিচারপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রধান বিচারপতির মতামত ও সুপারিশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হয়। তাই অবসরের আগে প্রথা অনুযায়ী বর্তমান প্রধান বিচারপতি তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে রঞ্জন গগৈর নাম সুপারিশ করেন।
জ্যেষ্ঠতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেও রঞ্জন গগৈ ভারতের পরবর্তী সময়ের প্রধান বিচারপতির পদে আসীন হওয়ার কথা। তিনি ২০০১ সালে দিল্লি হাইকোর্টে নিযুক্ত ছিলেন। ২০১১ সালে তিনি পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে তিনি সুপ্রিম কোর্টে যোগ দেন।
বিচারব্যবস্থায় দুর্নীতি এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে বর্তমান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি প্রকাশ্যে মুখ খুলেছিলেন চার প্রবীণ বিচারপতি। বিষয়টিকে ভারতের বিচারব্যবস্থায় নজিরবিহীন হিসেবে দেখা হয়। গণমাধ্যমেও প্রধান বিচারপতির সঙ্গে চার বিচারপতির বিরোধ নিয়ে অনেক প্রতিবেদন হয়। এর মধ্যে দ্বিতীয় প্রবীণ বিচারপতি রঞ্জন গগৈও ছিলেন। বাকি তিন বিচারপতি হলেন জে চেলামেশ্বর, কুরিয়েন জোশেফ ও মদন লোকুর।
চার বিচারপতি তখন একযোগে বলেছিলেন, বিচারব্যবস্থা নিরপেক্ষ না হলে ভারতের গণতন্ত্র বাঁচবে না। এ মুহূর্তে ভারতের গণতন্ত্র বিপন্ন। বিচারের নামে এখানে অনিয়ম চলছে। মামলা বণ্টনের ক্ষেত্রেও পক্ষপাতিত্ব হচ্ছে। আদালতের মধ্যেই নিয়মানুবর্তিতা মেনে চলছেন না প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র।
সেই ঘটনার পর ভারতের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি কে হতে চলেছেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা ছিল গণমাধ্যমে। কিন্তু এত সবের পরও প্রধান বিচারপতি তাঁর উত্তরসূরি হিসাবে রঞ্জন গগৈর নাম প্রস্তাব করেন।
রঞ্জন গগৈ উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম রাজ্যের বাসিন্দা। তাঁর বাবা আসামের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রী কেশবচন্দ্র গগৈ। রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বেই ভারতের বহু আলোচিত-সমালোচিত নাগরিকপঞ্জির কাজ চলছে।