হিন্দু-মুসলিম মিলেই হিন্দু রাষ্ট্র : আরএসএস প্রধান

ভারতের অন্যতম হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত বলেছেন, ভারতের মাটিতে মুসলমানদের নিয়েই হবে হিন্দু রাষ্ট্র।
গত সোমবার থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে চলা আরএসএসের তিন দিনের কনক্লেভে এই ঘোষণা দেন মোহন ভাগবত। ভাগবত বলেন, ‘হিন্দুত্ব মানে অন্তর্নিহিতা এবং মুসলমানদের গ্রহণ করা। যেটা হিন্দুত্বের একটা অংশ। হিন্দু রাষ্ট্র মানে এই নয় যে যেখানে মুসলমানদের কোনো জায়গা হবে না। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। যদি আমরা মুসলমানদের গ্রহণ করতে না পারি, সেটা কখনই হিন্দুত্ব নয়।’
হিন্দুত্ববাদী এই নেতা ভারতের বৈচিত্র্যের পক্ষেও সওয়াল করেন। তিনি বলেন, ‘ভারত বহুত্ববাদের দেশ। তাই আমাদের উচিত এই হিন্দুত্ববাদকে গ্রহণ করা এবং তা উপভোগ করা। সমাজে একতা তৈরি করাই আরএসএসের অন্যতম লক্ষ্য। আমরা বিশ্বাস করি, সমাজ সম্পর্কে প্রত্যেকের আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এক একটি দল এক একটি মতকে ঠিক বলে মনে করে। তাই আমরা কোনো দড়ি টানাটানির মধ্যে যেতে চাই না। আমরা সব সময়ই রাজনীতি থেকে দূরে থাকতে চাই। আমাদের কোনো সক্রিয় সদস্য কোনো রাজনৈতিক দলে কোনো পদ গ্রহণ করবে না। আরএসএসকে আমরা সমাজ সংস্কারের মঞ্চ হিসেবে ব্যবহার করতে চাই।’
সংঘপ্রধান এই কনক্লেভের দ্বিতীয় দিন গতকাল মঙ্গলবার আরো জানিয়ে দেন, কোনো রাজনৈতিক উচ্চাশা নেই রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের। তারা কোনোদিন নির্বাচনে অংশও নেবে না।
ভারতের বর্তমান মোদি সরকারের সঙ্গে আরএসএসের গোপন আঁতাত প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মোহন ভাগবত বলেন, ‘অনেকেই মনে করেন, মোদি সরকারকে নাকি নাগপুর (আরএসএসের সদর দপ্তর) থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত ধারণা। সরকারের নীতির ওপর আমাদের কোনো হাত নেই। আমাদের কিছু সাবেক সদস্য রাজনীতি করেন এবং বর্তমান ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সদস্য। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, আমরাই সরকার চালাই।’
ভাগবত ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতীয় কংগ্রেসের ভূমিকার কথাও স্বীকার করে নেনে। তিনি বলেন, কংগ্রেসের আঙিনায় একটা বিরাট বিপ্লব গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়েছিল। কংগ্রেসই অসংখ্য সর্বত্যাগী মনীষীর জন্ম দিয়েছে, যাঁরা আজও আমাদের অনুপ্রেরণা দেন। ভারতের স্বাধীনতা-সংগ্রামের ইতিহাসে যে কংগ্রেসের বড় ভূমিকা রয়েছে, সে কথাও স্বীকার করে নেন হিন্দুত্ববাদী এই নেতা।