পশ্চিমবঙ্গে বাংলা শিক্ষকের দাবিতে বিক্ষোভ, গুলিতে নিহত ২

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর দিনাজপুর জেলায় স্কুলে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে চলমান বিক্ষোভে গুলিতে দুজন নিহত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার জেলার ইসলামপুর এলাকার দাড়িভিটা হাইস্কুলে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলাজুড়ে। এর মধ্যে এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ শুক্রবার ক্ষমতাসীন বিজেপির ছাত্রসংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) বনধের ডাক দেয়। উত্তর দিনাজপুর জেলাজুড়ে ১২ ঘণ্টার বনধে উত্তেজনা চলছে জেলায়। সকালে রায়গঞ্জে ভাঙচুর করা হয়েছে বেশ কয়েকটি বাস।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুরের দাড়িভিটা হাইস্কুলে বাংলা মাধ্যমের শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে—এই দাবিতে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা এলাকা। শুরু হয় অবরোধ, ইট-পাথর নিক্ষেপ, বোমা-গুলি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে পুলিশের গুলি লেগে রাজেশ সরকার নামের স্কুলের এক প্রাক্তন ছাত্রের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয় তাপস বর্মণ নামে স্কুলেরই একাদশ শ্রেণির এক ছাত্র। আজ ভোরে তাপসের মৃত্যু হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এ ছাড়া সংঘর্ষে সৌরভ বর্মণ নামের এক ছাত্রের পায়ে গুলি লেগে জখম হয় সে। উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে।
জানা গেছে, ইসলামপুরের দাড়িভিটা হাইস্কুলে বাংলা শিক্ষক কম থাকা সত্ত্বেও সেখানে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা চলছে সংস্কৃত ও উর্দুর শিক্ষক। এই অভিযোগ তুলে কয়েক দিন ধরেই দাড়িভিটা হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ দেখাতে থাকে। গতকাল স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানতে পারে, স্কুলে একজন সংস্কৃত ও একজন উর্দুর শিক্ষক যোগ দিয়েছেন। এরপর বিক্ষোভে ফেটে পড়ে তারা। শিক্ষার্থীরা স্কুলের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এরপর তারা বেলা দেড়টা নাগাদ ইসলামপুর-গোয়ালপোখর সড়ক অবরোধ করে। দুই ঘণ্টা পরে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে এবং স্কুলের তালা খুলতে গেলে সংঘর্ষ বাধে।
এ ঘটনায় উত্তর দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপার সুমিত কুমার দাবি করেন, পুলিশ গুলি চালায়নি। তবে কেন এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।