কলকাতায় শুরু হলো বাংলাদেশ বইমেলা

কলকাতার মোহরকুঞ্জে অষ্টম বাংলাদেশ বইমেলা শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এ বইমেলা চলবে টানা ১০ দিন।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপহাইকমিশন ও বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির উদ্যোগে শুক্রবার সন্ধ্যায় উদ্বোধন করা হয় এ বইমেলার।
কলকাতায় বাংলাদেশের উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। সম্মানিত অতিথি হিসেবে ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান। এ ছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রাবন্ধিক ও গবেষক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়, কলকাতার পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায়।
আবুল মাল আব্দুল মুহিত বলেন, ‘বাংলা শুধু বাংলাদেশের মানুষের ভাষা নয়, পশ্চিমবঙ্গের মানুষের ভাষাও বাংলা। তাই বাংলাদেশের লেখকদের বইয়ের প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আগ্রহ থাকা স্বাভাবিক। এই বাংলাদেশ বইমেলা কলকাতার মাটিতে সেই আগ্রহ পূরণের কাজটি করে।’ ইলেকট্রিক মিডিয়ার প্রসারের ফলে মুদ্রিত আকারে প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ক্রমশ কমে যাচ্ছে, কিন্তু এ ধরনের বইমেলার ভেতর দিয়েই সে অভাব পূরণ করা যাবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার বলেন, ‘সামাজের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বইয়ের পাঠক তৈরি করা প্রয়োজন। কলকাতা বইমেলা সেই প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়, তাই কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলার প্রয়োজন রয়েছে। এ ছাড়া কলকাতার পাঠকদের মধ্যেও বাংলাদেশের লেখকদের লেখার ব্যাপারে যথেষ্ঠ আগ্রহ রয়েছে। বাংলাদেশ বইমেলা সে চাহিদা পূরণ করবে।’
বই বরাবরই বাঙালির কাছে প্রিয় একটি জিনিস। বাংলাদেশের বাঙালি বা পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির কাছে বইয়ের আগ্রহ যথেষ্ট উল্লেখ করে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, 'বাংলাদেশের লেখকদের বই পশ্চিমবঙ্গের পাঠকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কলকাতার এই বাংলাদেশ বইমেলা অত্যন্ত জরুরি।’
এ ছাড়া বিশেষ বক্তৃতায় অধ্যাপক ড. রতন সিদ্দিকি বলেন, ১৯৪৭ সালে বাংলা ভাগ হলেও বাঙালির অখণ্ড সংস্কৃতি ভাগ হয়নি। কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বইমেলা বাঙালির সংস্কৃতিকে মজবুত করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি সময় প্রকাশনের স্বত্বাধিকারী ফরিদ আহমেদ খান বলেন, ২০১১ সালে থেকে কলকাতার মাটিতে বাংলাদেশ বইমেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ। তাঁর সহযোগিতাতেই কলকাতায় এ বইমেলা আজ বিশাল অবস্থান নিয়েছে। আশা করছি আগামী দিনে এ মেলার আরো প্রসার ঘটবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন দুই বাংলার শিল্পীরা। সংগীত পরিবেশন করেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পী ফাতেমা তুজ জোহরা।
প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা এবং শনি ও রোববার রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে। এবারের মেলায় বাংলাদেশের ৬১টি প্রকাশনির ৬৯টি স্টল অংশ নিয়েছে। প্রথম দিন থেকেই এ মেলাকে ঘিরে কলকাতার পাঠক ও দর্শকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে।