পশ্চিমবঙ্গের শিয়ালদহে ট্রেন বন্ধ, দুর্ভোগে বাংলাদেশি যাত্রীরা

ভারতের শিয়ালদহ শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকার কারণে ভারতে ঢুকে সমস্যায় পড়েছেন শতাধিক বাংলাদেশি।
আজ রোববার পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অন্যতম ট্রেন রুট বনগাঁ-শিয়ালদহ এবং বনগাঁ-হাসনাবাদ শাখায় ট্রেন বন্ধ থাকার কারণে তৈরি হয়েছে এই সমস্যা।
জানা যায়, বাংলাদেশ ও ভারতের বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর আজ রোববার সমস্যায় পড়েছেন বহু বাংলাদেশি ট্রেনযাত্রী।
গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে আজ রোববার দিবাগত রাত ১টা পর্যন্ত ভারতের পূর্ব রেলের শিয়ালদহ বিভাগে বারাসত থেকে মধ্যমগ্রাম রেল স্টেশনের মধ্যে চলাচল করছে না কোনো ট্রেন। ফলে ভারতের সীমান্ত শহর বনগাঁ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত ট্রেন চলাচল কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। একইভাবে হাসনাবাদ শাখাতেও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ট্রেন চলাচল। যে কারণে পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশের পর বাংলাদেশি পর্যটকরা শিয়ালদহ যাওয়ার ক্ষেত্রে রেলপথে সমস্যার মুখে পড়ছেন। অন্যদিকে ঘোজাডাঙ্গা স্থলবন্দর দিয়েও ভারতে প্রবেশ করে সমস্যায় পড়ছেন বাংলাদেশিরা।
ভারতের পূর্ব রেল সূত্রে জানা যায়, বারাসতের ১২ নম্বর রেল গেটের দুই পাশের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে রেল লাইনের নিচ দিয়ে ভূগর্ভস্থ সাবওয়ে তৈরির জন্য ২৪ ঘণ্টা ওই লাইনে ট্রেন না চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার জেরে শিয়ালদহ-বনগাঁ, শিয়ালদহ-বারাসত ও শিয়ালদহ-হাসনাবাদ শাখায় বহু লোকাল ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কিছু ট্রেন মধ্যবর্তী স্টেশনগুলোতে শাটল হিসেবে চালানো হলেও তার সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য। ফলে রোববার সকাল থেকেই এই লাইনের যাত্রীরা ও ভারতে আসা বাংলাদেশি পর্যটকরা মহাসমস্যার মধ্যে পড়েছেন।
পূর্ব রেলের শিয়ালদহ বিভাগে বারাসত একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রেল জংশন। এই জংশন থেকেই একদিকে বারাসত-বাংলাদেশের বনগাঁ স্টেশন হতে পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্তে যেমন যাওয়া যায়, তেমনি হাসনাবাদ হয়ে ঘোজাডাঙ্গা-ভোমরা সীমান্তে যাওয়া যায়। ওই দুই সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন বহু বাংলাদেশি ট্রেনে করে বারাসত জংশন হয়ে শিয়ালদহে যাতায়াত করে। কম খরচে কলকাতায় যাওয়ার জন্য এই ট্রেনপথই বাংলাদেশিদের যাতায়াতের অন্যতম একটি রাস্তা। সেখানে এদিন সমস্যার কারণে রোববার সকাল থেকেই বিপাকে পড়েছেন ভারতে আসা বহু বাংলাদেশি। অগত্যা পেট্রাপোল ও ঘোজাডাঙ্গা থেকে মোটা রুপি ব্যয় করে তাঁদের সড়কপথেই যেতে হচ্ছে কলকাতায়।
তবে পূর্ব রেলের পক্ষ থেকে যাত্রীদের সহায়তা করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানা যায়। বারাসত রেলের জিআরপি ওসি দীপক পাইক জানান, মধ্যমগ্রাম ও বারাসত স্টেশনের মধ্যে ট্রেন না চলার কারণে যাত্রীদের রেলের তরফে একটি পরিষেবার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে বনগাঁ থেকে বারাসত বা শিয়ালদহ থেকে বারাসত পর্যন্ত শাটল ট্রেনে আসা যাত্রীরা টিকিট দেখিয়ে নিতে পারবেন এই পরিষেবা। ওই পরিসেবার মাধ্যমে যাত্রীদের বারাসত স্টেশন থেকে মধ্যমগ্রাম ও মধ্যমগ্রাম থেকে বারাসত স্টেশন পর্যন্ত রেল বাসে করে যাত্রীদের পৌঁছে দেবে। তবে সেই পরিষেবা চালু থাকলেও এই লাইনে যেহেতু শাটল ট্রেনের সংখ্যা অত্যন্ত নগণ্য থাকবে সেহেতু যাত্রী দুর্ভোগ আজ দিনভর চলবেই। বনগাঁ জিআরপি ওসি লোকনাথ ঘোষ জানান, বনগাঁ থেকে বারাসত পর্যন্ত এদিন কয়েকটি শাটল ট্রেন চললেও সেই ট্রেন থাকবে অত্যন্ত কম। রেলসূত্রে জানা যায়, নির্ধারিত টাইম টেবিল মেনে এই শাটল ট্রেন চলবে না। ফলে আগেভাগে যাত্রীরা কখন কোন ট্রেন ছাড়বে সেটা বুঝতে না পারায় সমস্যা প্রকট হবে।