ভারতের রাজনীতিবিদ জর্জ ফার্নান্দেজ আর নেই

ভারতের সাবেক মন্ত্রী জর্জ ফার্নান্দেজ আর নেই। আজ মঙ্গলবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশটির সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন জর্জ ফার্নান্দেজ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
১৯৩০ সালের ৩ জুন কর্নাটকের মাঙ্গালুরুতে ক্যাথলিক পরিবারে জন্ম হয় জর্জ ফার্নান্দেজের। বাবা জন জোসেফ ফার্নান্দেজ ছিলেন বিমা কোম্পানির কর্মকর্তা। মা অ্যালিস ফার্নান্দেজ ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম জর্জের অনুরাগী ছিলেন। যে কারণে নিজের ছয় সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তানের নাম রেখেছিলেন জর্জের নামে। ১৯৪৮ সালে জর্জের বাবা এবং মা তাঁকে বেঙ্গালুরুতে পাঠিয়েছিলেন যাজক হিসেবে প্রশিক্ষণ নিতে। কিন্তু পরের বছরেই তৎকালীন বোম্বে গিয়ে শ্রম আন্দোলনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে অন্যতম শ্রমিক নেতা হয়ে ওঠেন জর্জ ফার্নান্দেজ।
১৯৬৭ সালে দক্ষিণ মুম্বাই থেকে কংগ্রেস নেতা এস কে পাটিলকে হারিয়ে প্রথমবার লোকসভার সদস্য হন জর্জ ফার্নান্দেজ। তিনি তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে মোট ৯ বার লোকসভার সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০০৯ সালে শেষবার রাজ্যসভার সাংসদ নির্বাচিত হন।
শ্রমিক আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা ছিলেন জর্জ। অটল বিহারী বাজপেয়ীর অন্যতম সহযোদ্ধাও ছিলেন তিনি। ১৯৯৯ সালে এনডিএ সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ছিলেন তিনি। তাঁর আমলেই কারগিল যুদ্ধে সাফল্য পায় ভারত। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ছাড়াও তথ্য সম্প্রচার, শিল্প এবং রেল মন্ত্রণালয়ের অস্থায়ী দায়িত্বও পালন করেন তিনি। ইন্দিরা গান্ধীর অন্যতম প্রবল বিরোধী মুখের মধ্যে জর্জ ছিলেন অন্যতম। সেই সময় তিনি ভারতে সমতা পার্টি প্রতিষ্ঠা করেন। ভারতের প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন কফিন দুর্নীতিতে নাম জড়ায় তাঁর। যার জেরে তিনি পদত্যাগ করেন।
জর্জ ফার্নান্দেজের স্ত্রী লীলা ফার্নান্দেজ সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হুমায়ুন কবিরের মেয়ে। ১৯৭১ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্ত ১৯৮০ সালে তাঁরা আলাদা হয়ে যান। তাঁদের একমাত্র ছেলে শন ফার্নান্দেজ যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। ইংরেজি, তামিলসহ মোট ১০টি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন জর্জ ফার্নান্দেজ।