গৃহকর্মীকে স্বামীর যৌন নির্যাতন, জেল হতে পারে স্ত্রীর
এক সৌদি নারীর স্বামী তাদের বাড়ির গৃহকর্মীকে যৌন হেনস্তা করছিলেন। আর কোনোভাবে সেটি ধরা পড়ে স্ত্রীর ক্যামেরায়। ঘটনাটি ভিডিও করে তিনি তা শেয়ার করেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
সাদাচোখে যে কারো মনে হবে যে এখানে স্বামী ব্যক্তিটি যেহেতু একটি অনৈতিক কাজ করেছেন সেহেতু শাস্তি পাওনা রয়েছে তাঁর। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে ঠিক উল্টোটা। অর্থাৎ স্বামীর নয় স্ত্রীর সাজা হতে পারে বলে শোনা যাচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে স্ত্রীর অপরাধ, এই ভিডিও প্রকাশ করে স্বামীপ্রবরের সম্মানহানি করেছেন তিনি। তাই মানহানির মামলায় কারাদণ্ডও হতে পারে তাঁর।
প্রকাশিত ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, ওই দম্পতির বাড়ির রান্নাঘরে স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সেখানে কর্মরত গৃহকর্মীর কাছ থেকে বিশেষ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছেন ঐতিহ্যবাহী সৌদি পোশাক পরিহিত স্বামী। সেখানে গৃহকর্মীকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন ওই ব্যক্তি। ভিডিওতে এটাও দেখা যায় যে ওই ব্যক্তিকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন গৃহকর্মী। ওই ব্যক্তির কর্মকাণ্ড স্পষ্টতই যৌন হেনস্তা। আর এই দৃশ্য দেখতে পেয়ে নিজের হাতে থাকা মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করে নেন স্ত্রী।
ধারণ করা দৃশ্যটুকু ইউটিউবে প্রকাশ করেন ওই স্ত্রী। ভিডিওর সঙ্গে দেওয়া ক্যাপশনে তিনি লেখেন, এই স্বামীর জন্য ন্যূনতম একটি সাজা হবে। তা হলো তাকে একটু দোষারোপ করা।
টেলিগ্রাফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভিডিওটি প্রকাশের পরই তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। মধ্যপ্রাচ্যের সীমা ছাড়িয়ে বিভিন্ন দেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা এই ভিডিও ও ছবি শেয়ার করছেন। সেই সাথে হ্যাশট্যাগে জুড়ে দিচ্ছেন ‘সৌদি উইমেন ক্যচেস হাসব্যান্ড চিটিং’ (#SaudiWomanCatchesHusbandCheating) শিরোনাম।
তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন তুললেও এ ভিডিওর জন্য সাজার মুখোমুখি হতে পারেন ওই স্ত্রী। সৌদি আরবের প্রখ্যাত আইনজীবী মজিদ কোয়ারব বলেছেন, ‘তথ্য প্রযুক্তি আইন অনুযায়ী স্বামীর অবমাননা করার দায়ে ওই নারীর এক বছরের কারাদণ্ড অথবা পাঁচ লাখ ডলার জরিমানা করা হতে পারে। আইনটিতে মোবাইল ফোন বা অন্য যন্ত্র ব্যবহার করে কারো ছবি তুলে তার মানহানী করলে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে।’
অবশ্য সৌদি আরবের মতো দেশে যেখানে নারীরা এখনও গাড়ি চালানোর অনুমতি পান না, ভ্রমণ বা চাকরির জন্য বাড়ির পুরুষ অভিভাবকের অনুমতি লাগে সেখানে এই নারীর সাহসিকতার প্রশংসা করছেন সবাই। এছাড়া এই ঘটনা প্রকাশের পর দেশটিতে গৃহকর্মীদের অবস্থা ও মানবাধিকার সম্পর্কেও একটা ধারণা পাওয়া গেছে।
আল ইয়ামামা নামের এক ব্লগার গাল্ফ নিউজের মাধ্যমে ওই নারীর উদ্দেশে বলেন, ‘আমি আপনার সাহসের জন্য আন্তরিক অভিবাদন জানাই। আপনি আপনার জায়গা থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য সেরাটা করেছেন। এরকম একটা প্রতিশোধ নেওয়া এখনকার সময়ের জন্য খুবই দরকার ছিল।’