না-ফেরার দেশে সংগীতশিল্পী প্রতীক চৌধুরী

বাংলা সংগীতজগতে ফের নক্ষত্রের পতন। এবার প্রয়াত হলেন জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী প্রতীক চৌধুরী। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।
গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নিজের অফিস থেকে বাড়ি ফেরার পথেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় প্রতীক চৌধুরীর।
সন্ধ্যায় কলকাতার মুরলিধর সেন স্ট্রিটে পৈতৃক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন প্রতীক। হঠাৎ করেই পথে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক প্রতীককে মৃত ঘোষণা করেন। শিল্পীর মৃত্যুতে সংগীতমহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে যে কজন গায়কের হাত ধরে বাংলা সংগীতজগতে নতুন জোয়ার এসেছিল, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রতীক চৌধুরী।
১৯৯৪ সালে প্রথম বিজ্ঞাপনী গান, অর্থাৎ জিঙ্গলস দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন প্রতীক। অনেক বিখ্যাত ব্যান্ডের হয়ে জিঙ্গলস গেয়েছিলেন তিনি। কুকমি, খাদিম, টাটা স্টিল, স্টিলাক্সের বিজ্ঞাপনেও তাঁর কণ্ঠস্বর বিখ্যাত হয়ে ওঠে।
পরবর্তী সময়ে প্লেব্যাক গায়ক হিসেবে একের পর এক ছবিতেও গান গেয়েছেন প্রতীক চৌধুরী। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া ‘বাঙালি বাবু’, ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘পাতালঘর’-এর মতো ছবিতেও প্লেব্যাক করেন তিনি।
এ ছাড়া অনিকেত চট্টোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নির্মিত ছবি ‘হবুচন্দ্র রাজার গবুচন্দ্র মন্ত্রী’তেও বেশ কিছু গান গেয়েছেন প্রতীক। এই ছবিতে গাওয়া গানই তাঁর জীবনের শেষ কাজ। এ ছাড়া প্রতীক চৌধুরীর গাওয়া মন বাওরা সংগীতপিপাসুদের মন ছুঁয়েছিল।
গত বছরের ডিসেম্বরে নিজের জন্মদিনে প্রতীক তাঁর অনুরাগীদের উপহার দেন ‘এই বাংলার নীড়ে’ নামে অ্যালবাম।
বাংলা সংগীতজগতে প্রতীক চৌধুরী জনপ্রিয় নাম। তাঁর গাওয়া রবীন্দ্রসংগীত আজও অমলিন। দুই বাংলাকে সুরের সুতোয় বাঁধতে পারতেন এমন যে কজন শিল্পী আছেন, প্রতীক চৌধুরী তাঁদের অন্যতম।