যা যা আছে বিজেপির ইশতেহারে

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি, রামমন্দির নির্মাণ, অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা, কাশ্মীরিদের বিশেষ অধিকার প্রত্যাহার এবং কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করাসহ ৭৫টি সংকল্প নিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করেছে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।
আজ সোমবার দলের সভাপতি অমিত শাহ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংসহ দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নয়াদিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই ইশতেহার প্রকাশ করেন।
কট্টর হিন্দুত্ববাদী মতাদর্শে ভর করে ২০১৪ সালের নির্বাচনে কংগ্রেসকে বিপুল ভোটে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। আসন্ন নির্বাচনেও জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে মরিয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলটি। নির্বাচনী প্রচারণায় হিন্দু জাতীয়তাবাদ ছাড়াও, সন্ত্রাসবাদ, কাশ্মীর সংকটসহ আরো কয়েকটি বিষয়ে জোর দিয়ে আসছিলেন বিজেপি নেতারা। আর তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল নির্বাচনী ইশতেহারে।
ভোট শুরুর মাত্র তিনদিন আগে সোমবার ‘স্বকল্পপত্র’ নামে প্রকাশিত এই ইশতেহার আগামী পাঁচ বছরের জন্য ৭৫টি সংকল্পের কথা উঠে এসেছে। জাতীয়তাবাদ, দেশের ভেতর এবং বাইরের আগ্রাসন ঠেকানো, কাশ্মীরে জমি কেনার ক্ষেত্রে শুধু কাশ্মীরিদের বিশেষ অধিকার আইন প্রত্যাহার এবং কৃষকের আয় দ্বিগুণ করার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।
অবকাঠামো খাতে ২০২৪ সালের মধ্যে ১০০ ট্রিলিয়ন রুপি ব্যয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি। এতে বলা হয়েছে, অবকাঠামো খাতের এই বিশাল বাজেট তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখবে।
ইশতেহারে পণ্য ও সেবার করব্যবস্থাও (জিএসটি) সহজ করার কথা বলা হয়। ২০১৭ সালে মোদি জিএসটি চালু করেন। এটি ভারতীয়দের ব্যবসাবাণিজ্য ও প্রবৃদ্ধিতে বিরূপ ফেলেছিল বলে বিশ্লেষকরা সে সময় বলেছিলেন। কর কমানো হবে এবং ২০২৪ সাল নাগাদ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মোট ১৪.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়া হবে।
গণতন্ত্রের সত্যিকার প্রতিচ্ছবি ফুটিয়ে তোলার প্রতিজ্ঞা করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আমরা জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত। আমাদের এই একটাই মিশন এবং একটাই ভিশন।’
সেই সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে ভারতে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি স্থান পেয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী ইশতেহারে। ইশতেহারে রাম মন্দির নির্মাণের কথাও বলছে বিজেপি।
বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ বলেন, ‘আপনারা আরো একবার আমাদের এবং আমাদের জোটের নেতাদের ভোট দিয়ে আশীর্বাদ দিন। কথা দিচ্ছি, আমরা শক্তিশালী একটি সরকার আপনাদের উপহার দেব।’
এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রাজনীতিতে ধর্মীয় মূল্যবোধকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা করেছেন আগে থেকেই। কেবল ভোট কুড়ানোর উদ্দেশ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্যই অনেক উন্নয়ন পরিকল্পনায় হাত দিয়েছেন মোদি। যার একটি উত্তর প্রদেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের তীর্থস্থানখ্যাত বারানসী। গঙ্গার উপকূলীয় নিজের এই আসনেই শত বছরের বিশ্বনাথ মন্দিরকে ঘিরে বিশাল বাজেটের নতুন প্রকল্পের কাজ চলছে। যার মূল লক্ষ্যই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন জয় করা। যদিও স্থানীয়দের অনেকেই বিশ্বাস করেন, বহুমূল্যের এই প্রকল্পের কারণে তীর্থস্থান হিসেবে জায়গাটির ভাবগাম্ভীর্য নষ্ট হবে।
১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে সাতটি ধাপে ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ১৭তম জাতীয় নির্বাচনের ভোটগণনা হবে ২৩ মে এবং একই দিনে ভোটের ফল ঘোষণা করা হবে।