দিল্লিতে প্রত্যাবর্তন, নাকি পরিবর্তন

ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ করা হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। কড়া নিরাপত্তা আর টান টান উত্তেজনার মধ্যে স্থানীয় সময় আজ সকাল ৮টা থেকে এই ভোট গণনা শুরু হয়েছে।
৫৪২টি আসনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গণনা করা হলেও এবার অন্যবারের চেয়ে বেশি সময় লাগবে বলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। কারণ, এবার ইভিএমে ভোট গণনার পাশাপাশি ভিভিপ্যাটের সঙ্গেও তা মিলিয়ে দেখা হবে। এ কারণেই বেশি সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতায় রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার আবার দিল্লির মসনদ দখল করে ক্ষমতায় ফিরবে, নাকি বিরোধী দল কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোট ক্ষমতা দখল করবে—তা জানা যাবে আজকের ফল ঘোষণার মধ্য দিয়ে।
গত ১৯ মে সাত ধাপে ভারতের ১৭তম লোকসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়। ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন জরিপ সংস্থা বুথফেরত ফল প্রকাশ করতে থাকে। অধিকাংশ জরিপেই আভাস মিলেছে, দিল্লির ক্ষমতা ফের বিজেপির হাতে যাচ্ছে। এই জরিপ সত্য হলে নরেন্দ্র মোদিই ফের প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন, এটা নিশ্চিত। তবে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কর্মীদের বলা হয়েছে, এ ধরনের জরিপে তাঁরা যেন হতাশ না হন।
দিল্লির ক্ষমতা কার হাতে যাচ্ছে—এ নিয়ে যখন চলছে নানা জল্পনা, ঠিক তখনই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ভোট গণনার সময় বিভিন্ন রাজ্যে সহিংসতা হতে পারে। আর এ জন্য ভারতের সব রাজ্যের পুলিশ কর্মকর্তা ও প্রধান সচিবদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ও ভোট গণনার যন্ত্রাংশ রাখার জন্য ব্যবহৃত স্ট্রং রুম এবং ভোট গণনার কেন্দ্রগুলোতে নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থা জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও ত্রিপুরার কোনো কোনো সংগঠন ও কর্মকর্তারা এমন সব মন্তব্য করছেন, যার ফলে সহিংসতা ও ভোট গণনায় ব্যাঘাত ঘটতে পারে।
গত ১১ এপ্রিল থেকে ১৯ মে পর্যন্ত সাতটি ধাপে ভারতের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ভারতের প্রায় ৯০ কোটি ভোটারের মধ্যে ৬৭ শতাংশ মানুষ ভোট দেয়। লোকসভার মোট ৫৪৩টি আসনের মধ্যে এবার ৫৪২টি আসনে ভোট হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তামিলনাড়ু রাজ্যের একটি আসনে এবার ভোট হয়নি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠ পেতে গেলে কোনো দল বা জোটকে ম্যাজিক সংখ্যা ২৭২টি আসন পেতে হবে। সারা দেশে এক হাজার ৮৪১টি রাজনৈতিক দলের আট হাজারের বেশি প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।