ভোটের পর মুসলিম যুবককে নির্যাতন, শাস্তি চাইলেন গৌতম গম্ভীর

ভারতের সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএর নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর গত শনিবার মোদি বলেছিলেন, সমাজের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের বিশ্বাস অর্জন করতে হবে। এত দিন যেভাবে সংখ্যালঘুদের ‘ভোটব্যাংকের স্বার্থে’ ব্যবহার করা হতো, তা বন্ধ করতে লড়তে হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, ভারতের হবু প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলার একদিনের মধ্যেই বিজেপিশাসিত হরিয়ানার গুরুগ্রামে ঘটল একটি অপ্রীতিকর ঘটনা।
মোহাম্মদ বরকত (২৫) নামের এক যুবকের দাবি, মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ফিরে আসার সময় রাস্তায় চার-পাঁচ লোক তাঁকে ঘিরে ধরে পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেয় এবং বারবার ‘জয় শ্রী রাম’ বলার জন্য জোর করে। রাজি না হলে তাঁকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ বরকতের।
মুসলিম ওই যুবক বলেন, ‘আমি মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে ফিরছিলাম। রাস্তায় একজন লোক পথ আটকে আমার মাথার টুপি খুলে ফেলতে বলে। রাজি না হওয়ায় জোর করে মাথা থেকে টুপি ফেলে দিয়ে আমাকে মারতে থাকে, সঙ্গে চলে গালিগালাজ।’
সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেননি দাবি করে বরকত আরো বলেন, “আরো কয়েকজন এসে আমাকে ‘জয় শ্রী রাম’ উচ্চারণ করতে বলে। আমি বললাম, কেন বলব এ কথা? এটা বলার পরই তারা আমাকে মারধর শুরু করে এবং আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেয়।”
এরপর একপর্যায়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায় বলে দাবি করেন বরকত।
এনডিটিভি জানিয়েছে, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের কাজও শুরু করেছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
এদিকে, এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে টুইট করেছেন এবারের নির্বাচনে বিজেপির হয়ে পূর্ব দিল্লি থেকে নির্বাচিত হওয়া ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক সদস্য গৌতম গম্ভীর।
“In Gurugram Muslim man told to remove skullcap,chant Jai Shri Ram”.
It is deplorable. Exemplary action needed by Gurugram authorities. We are a secular nation where @Javedakhtarjadu writes “ओ पालन हारे, निर्गुण और न्यारे” & @RakeyshOmMehra gave us d song “अर्ज़ियाँ” in Delhi 6.— Gautam Gambhir (@GautamGambhir) May 27, 2019
গম্ভীর বলেন, ‘এটা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক জাতি। গুরুগ্রাম প্রশাসনকে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’
এবারের নির্বাচনে হরিয়ানার ১০টি আসনেই জিতেছেন বিজেপির প্রার্থীরা।
এখন গুরুগ্রামে থাকলেও বরকত বিহারের বেগুসরাইয়ের বাসিন্দা। এবারের লোকসভা নির্বাচন প্রক্রিয়ার একেবারে শুরু থেকেই পুরো দেশের নজর ছিল বিহারের বেগুসরাই আসনের দিকে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্রসংগঠনের সাবেক সভাপতি কানহাইয়া কুমারকে দেখা হচ্ছিল দেশটির রাজনীতিতে নতুন চমক হিসেবে। এই ছাত্রনেতাকে মোকাবিলা করতে ক্ষমতাসীন বিজেপি নাওয়াদা থেকে জোর করে নিয়ে আসে ঝানু রাজনীতিবিদ গিরিরাজ সিংকে। শেষ পর্যন্ত চার লাখের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন গিরিরাজ সিং।
গুরুগ্রামের ঘটনার দুদিন আগে মধ্যপ্রদেশেও একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। গোমাংস নিয়ে যাওয়া হচ্ছে দাবি করে এক মুসলমান দম্পতিসহ চারজনকে বেধড়ক পেটানো হয় মধ্যপ্রদেশের সিওনিতে।