শপথের আগে মহাত্মাকে শ্রদ্ধা, যুদ্ধ-স্মারকে ফুল মোদির

ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয়বারের মতো আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শপথ নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। এর জন্য বিশাল আয়োজন করা হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের প্রতিনিধিদের পাশাপাশি যুদ্ধে নিহত সৈনিকদের পরিবার-পরিজনদের সামনে এই শপথ গ্রহণ হবে। মন্ত্রিসভার মুখ নিয়ে চলছে শেষবেলার আলোচনা।
তার আগে আজ সকাল ৭টায় দিল্লির রাজঘাটে ব্রিটিশবিরোধী অহিংস আন্দোলনের নেতা ও কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি-স্মারকে শ্রদ্ধা জানান মোদি। পরে তিনি শ্রদ্ধা জানান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বিজেপি নেতা অটলবিহারি বাজপেয়ির স্মারকে।
এরপর ইন্ডিয়া গেটের কাছে জাতীয় যুদ্ধ-স্মারকে যান মোদি। সেখানে তিনি কর্তব্যরত অবস্থায় শহীদ সেনাকর্মীদের স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় মোদির সঙ্গে ছিলেন বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ, বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ, মেনেকা গান্ধী, স্মৃতি ইরানি, জেপি নড্ডা।
নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে সন্ধ্যা ৭টায় শুরু হবে মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান। নরেন্দ্র মোদিকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। এদিন মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্যও শপথ নিতে পারেন বলে জানা গেছে। অনুষ্ঠানে সাড়ে ছয় হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বিভিন্ন রাজ্যে ‘খুন হওয়া’ বিজেপির নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন।
মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন-বিমসটেক’-এর সদস্যভুক্ত দেশগুলোর নেতারা। ভারত ছাড়াও বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, নেপাল ও ভুটান। এ ছাড়া কিরগিজস্তান গণপ্রজাতান্ত্রিক দেশের প্রেসিডেন্ট এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীকেও এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এরই মধ্যে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন।
মোদি হলেন প্রথম বিজেপি নেতা, যিনি প্রথমবার পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। এর আগে এই কৃতিত্ব ছিল দুই কংগ্রেস নেতা জওহরলাল নেহরু ও তাঁর কন্যা ইন্দিরা গান্ধীর। মোদির আগে অটলবিহারি বাজপেয়ি পরপর দুবারের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেও তাঁর প্রথমবারের মেয়াদ ছিল মাত্র ১৯ মাস।
৫৪৩ আসনবিশিষ্ট ভারতের লোকসভা নির্বাচনে এবারের নির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়েছে ৫৪২টি আসনে (অনিয়মের অভিযোগে তামিলনাড়ুর ভেলোর আসনটিতে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে)। এর মধ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট পায় ৩৫৩টি আসন। যার মধ্যে বিজেপি একাই ৩০৩টি আসন লাভ করে। উত্তরপ্রদেশের বারাণসী থেকে চার লাখ ৭৯ হাজার ভোটে জয়লাভ করেন নরেন্দ্র মোদি।
পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে যেখানে বিজেপি ২০১৪ সালে মাত্র দুটি লোকসভার আসনে জিতেছিল, সেখানে এবার ১৮টি আসন জিতেছে বিজেপি। ফলে এবার বেশি সংখ্যক নেতা মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন বলে আশা করছে পশ্চিমবঙ্গবাসী।
প্রথমে মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে সিদ্ধান্ত পাল্টান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক টুইটে তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হত্যার খবর মিথ্যা। মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানকে নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি।